পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ গৈয়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম শামসুদ্দিনকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. হান্নান খান। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পরে বিদ্যালয়ের কক্ষে সভাপতি হান্নান এমন ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ উঠেছে। মারধরে প্রধান শিক্ষকের বাম হাতের আঙুল ও তালু ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
আহত প্রধান শিক্ষক এস এম শামসুদ্দিন বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের কক্ষে বসে উপবৃত্তির তালিকা করছিলেন। এ সময় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. হান্নান খান এসে স্কুলের মূল ভবন থেকে পাশে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত একটি ঘরে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে বলেন। পরিত্যক্ত ঘরটিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির ভাই আবদুল হামিদ খান দখল করে রেখে সেখানেই থাকেন। প্রধান শিক্ষক ওই কক্ষে বিদ্যুতের ‘সাইড কানেকশন’ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি প্রথমে প্রধান শিক্ষককে গালমন্দ করেন। পরে চেয়ার দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। প্রধান শিক্ষক দুই হাত দিয়ে চেয়ারের আঘাত ঠেকাতে গেলে তাঁর বা হাতের আঙুল ও তালু থেঁতলে যায় এবং কেটে রক্তক্ষরণ হয়। এ ঘটনার পর একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জলিল হাওলাদারসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পরে বিদ্যালয়ের কক্ষে সভাপতি হান্নান এমন ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ উঠেছে। মারধরে প্রধান শিক্ষকের বাম হাতের আঙুল ও তালু ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির চেয়ারের আঘাত ঠেকাতে গেলে আমার বাঁ হাতের আঙুল ও তালু থেঁতলে যায় এবং কেটে রক্তক্ষরণ হয়। এ ঘটনার পর সহকারী শিক্ষক মো. জলিল হাওলাদারসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
মো. হান্নান খান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে একত্রে মসজিদে জুমার নামাজ পড়েছি। প্রধান শিক্ষকের একটি কথায় মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নামাজের পর এ বিষয় নিয়ে জানতে তাঁর কার্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে আমাকে আঘাত করতে চেষ্টা করেন। তখন আরেকটি চেয়ার নিয়ে তা ফেরাতে গেলে তিনি কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়তো হয়েছেন।’
প্রধান শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে আমাকে আঘাত করতে চেষ্টা করেন। তখন আরেকটি চেয়ার নিয়ে তা ফেরাতে গেলে তিনি কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়তো হয়েছেন।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক শামসুদ্দিনের বাম হাতের তালু ও আঙুল আঘাতে থেঁতলে গেছে। তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বা সদস্যদের মাধ্যমে এ ধরনের ঘটনা কলাপাড়াতে ইতিপূর্বে কখনোই ঘটেনি। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা শিক্ষকসমাজ এর বিচার চাই।’