পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেওয়া নিয়ে শিক্ষকদের দুই পক্ষের হাতাহাতি হয়েছে। এ সময় পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে ফেলা হয়। আজ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান আবদুল আলীম বলেন, ‘শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে। তাই বলে পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে ফেলা ও পদদলিত করা ন্যক্কারজনক। স্বাধীনতার পক্ষের কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকতে পারেন বলে মনে করি না।’
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিতে গেলে অন্য পক্ষ বাধা দেয়। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে যায়।
ব্যবসায় অনুষদ বিভাগের শিক্ষক কামাল হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মেয়াদ গত বছর ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর এ সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এরপরও শিক্ষক সমিতি কার্যক্রম চালাতে থাকায় অন্য শিক্ষকেরা ক্ষুব্ধ হন। ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠানেও শিক্ষক সমিতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গেলে অন্য শিক্ষকেরা আপত্তি জানান। তবে সেদিন উপাচার্য উপস্থিত থাকায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। আবার একই ধরনের ঘটনা ঘটল। তাঁরা এর বিচার চান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভাগ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেয়। এরপর শিক্ষক সমিতির ব্যানারে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ফজলুল হক তাঁর অনুসারীদের নিয়ে পুষ্পস্তবক দিতে যান। এ সময় অন্য শিক্ষকেরা পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। এতে অন্য শিক্ষকেরা ক্ষুব্ধ হন। তাঁরা বিলুপ্ত কমিটির ব্যানারে কেন ফুল দেওয়া হচ্ছে, সে প্রশ্ন তোলেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। ধস্তাধস্তিতে পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে যায়।
আমরা উপাচার্যকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি ঘটনার ভিডিও চিত্র সংগ্রহের কথা বলেছেন। ফুটেজ দেখে কারা ফুল ছিঁড়ল, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়াল কবির বলেন, ‘কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতির একপর্যায়ে ফজলুল হক নিজেই পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে ফেলেন। এটি শহীদদের প্রতি অমর্যাদা ও অবমাননাকর। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।’
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক বলেন, ‘কমিটি বিলুপ্ত হলেও সবাইকে নিয়েই সমিতি চলছে। সব শিক্ষকই এর সদস্য। আমরা সবাইকে নিয়ে ফুল দিতে গিয়েছিলাম। তবু একপক্ষ এর বিরোধিতা করে। তখন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।’ এ জন্য তিনি দুঃখিত জানিয়ে বলেন, ফুল কে ছিঁড়েছেন, জানেন না। ধস্তাধস্তির সময় হয়তো ছিঁড়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রীতম কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে ফুল ছেঁড়ার ব্যাপারটি ন্যক্কারজনক। আমরা উপাচার্যকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি ঘটনার ভিডিও চিত্র সংগ্রহের কথা বলেছেন। ফুটেজ দেখে কারা ফুল ছিঁড়ল, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’