বাড়ি থেকে নবজাতক চুরি, উদ্ধার ৫ ঘণ্টা পর

অবশেষে চুরি যাওয়া ২৩ দিনের শিশু কাওসারকে ফিরে পেয়েছে তার মা ফরিদা বেগম। আজ শনিবার সন্ধ্যায়
সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে নিজ বাড়ি থেকে ২১ দিন বয়সী একটি ছেলে নবজাতক চুরির পাঁচ ঘণ্টা পর উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। শিশুটি জেলার কামারখন্দ উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের বাড়াকান্দি গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও ফরিদা বেগম দম্পতির সন্তান। তার নাম রাখা হয়েছে কাওসার।

গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নবজাতকটি চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর নবজাতকটির মা ফরিদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সন্তানকে ঘরে ঘুমিয়ে রেখে গৃহস্থালির কাজে বাইরে গেলে কিছুক্ষণ পর এসে দেখেন ঘরে বাচ্চা নেই। পরে আশপাশের মানুষকে জিজ্ঞেস করলে কেউ কিছু বলতে পারেনি।

ঘটনার পর থেকেই শিশুটির বাবা শহিদুল ইসলাম ও মা ফরিদা বেগম বারবার জ্ঞান হারিয়ে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। এলাকাবাসী জানান, বাড়ি থেকে শিশু চুরির খবর শুনে তাঁরা খোঁজাখুঁজি করে না পেলে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এ সময় অনেকেই বলেন, বোরকা পরা এক নারীকে একটি শিশু নিয়ে কয়েকজন যেতে দেখেছেন। এ ঘটনায় অন্যান্য শিশুর বাবা-মায়েরা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

ঘটনার পর থেকেই শিশুটির বাবা শহিদুল ইসলাম ও মা ফরিদা বেগম বারবার জ্ঞান হারিয়ে মূর্ছা যাচ্ছিলেন। এলাকাবাসীর মধ্যে কয়েকজন বলেন, বোরকা পরা এক নারীকে একটি শিশু নিয়ে যেতে তাঁরা দেখেছেন। এ ঘটনায় অন্যান্য শিশুর বাবা-মায়েরা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) শাহিনুর কবির প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই জেলার বিভিন্ন থানার মাধ্যমে শিশুটিকে খুঁজে পেতে তৎপরতা চালায় পুলিশ। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের আভিসিনা হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় রানী নামের এক নিঃসন্তান নারীকে আটক করা হয়। তিনি কামারখন্দের বারাকান্দি গ্রামের সাহিদুল হকের স্ত্রী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী বলেছেন, বিয়ের দীর্ঘদিনেও তাঁর কোনো সন্তান না হওয়ায় এই নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি। সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শিশুটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

নবজাতক সন্তানকে ফিরে পেয়ে তার মা-বাবার খুশিতেও কান্না ঝরে পড়ছিল। নবজাতকটির মা ফরিদা বেগম অশ্রুভেজা কণ্ঠে বলেন, ‘আল্লাহর রহম হয়েছে বলেই আমাদের বাচ্চা আমরা পেয়েছি। পুলিশ ভাইরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। গ্রামের বাড়ির চারদিকে চেনা মানুষ, তার মধ্যে থেকে এমন চুরি আমরা চিন্তাও করতে পারি নাই।’

এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা মাহিম নামের ২৩ দিন বয়সী একটি শিশু চুরির ঘটনা ঘটে। এর ঠিক ৪ দিন পর ২৭ ফেব্রুয়ারি হাটিকুমরুল গোল চত্বর এলাকায় সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে জন্মের পাঁচ ঘণ্টা পর সামিউল নামের নবজাতক চুরি হয়। সেদিন রাতেই সলঙ্গা থানার আলোকদিয়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে দুই শিশুর একটিকে জীবিত ও অপরটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দুটি ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।