বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর পর ভ্যানচালকের মৃত্যু, অবরোধ

সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রের মৃত্যুর পর গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। সোমবার বেলা ৫ টায় মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়েছবি: নুতন শেখ

গোপালগঞ্জে বাসচাপায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলামের (২২) মৃত্যুর পর কয়েক ঘণ্টা পর তাঁকে বহনকারী ভ্যানের চালক মারা গেছেন।

আজ সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় ভ্যানচালক লিকু শেখ (৪০) গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত লিটু গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরপাথালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

বাসচাপায় হতাহতের ঘটনায় বেলা সাড়ে তিনটা থেকে সড়ক অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

আজ দুপুর ১২টার দিকে রাইসুলসহ চারজন ভ্যানযোগে চরপাথালিয়া থেকে ঘোনাপাড়ায় যাচ্ছিলেন। পাথালিয়া এলাকায় ভ্যানটির চাকা খুলে গেলে চালকসহ যাত্রীরা সড়কের ওপর ছিটকে পড়েন। এ সময় পেছন দিক থেকে আসা একটি বাস চাপা দিলে রাইসুলের মৃত্যু হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রাইসুল বগুড়ার কাহালু উপজেলার ভারসন গ্রামে শামসু রহমানের ছেলে। আহত জাকির হোসেন (২১), নাঈম ইসলাম (২০) ও মাজহারুল ইসলাম (২১) চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রাইসুল ও নাঈমের বাড়ি একই এলাকায়। সেই সুবাদে চীনের বিশ্ববদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জে বেড়াতে এসেছিলেন।

রাইসুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া ঢাকা-খুলানা মহাসড়ক অবরোধ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা পুলিশ লাইনস থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার, সর্বোচ্চ গতিসীমা ৪০ কিলোমিটার করা এবং ফুটপাতসহ সড়কবাতি স্থাপনের দাবি জানান। পাশাপাশি নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

আহত জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা তিনজন চীনের নর্থ চায়না ইলেকট্রিক পাওয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। রাইসুল ও নাঈমের বাড়ি একই এলাকায়। সেই সূত্রে আমরা এখানে বেড়াতে আসি। রাইসুল চরপাথালিয়ায় একটি মেসে থাকে। আমরা চারজন একটি ভ্যানে চড়ে ঘোনাপাড়ায় যাচ্ছিলাম। দুপুর ১২টার দিকে পাথালিয়া এলাকার টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে (টিটিসি) পৌঁছানোর পর ভ্যানের চাকা খুলে যায়। আমরা সড়কের ওপর ছিটকে পড়ি। এ সময় পেছন দিক থেকে একটি বাস রাইসুলকে চাপা দেয়। অল্পের জন্য বেঁচে যাই আমরা।’