বরিশালে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে তরুণীর ধর্ষণের মামলা
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে বরিশাল সিটি কপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন ওরফে রনির (৩৫) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন।
কেফায়েত হোসেন নগরীর বৌবাজার কসাইবাড়ির পুল এলাকার রফিকুল ইসলাম মঞ্জুর ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন আজ দুপুরে মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মো. হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বরিশাল নগরীর বাসিন্দা ওই তরুণী এ বছর এইচএসসি পাস করেছেন। তাঁর আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, বিচারক মামলা গ্রহণের পর পিবিআইকে অভিযোগ তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। আগামী ২৬ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেনের সঙ্গে ওই তরুণীর মুঠোফোনে পরিচয় হয়। এর সূত্র ধরে একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর চলতি বছরের ৭ মে জরুরি কথা আছে উল্লেখ করে কাউন্সিলর কেফায়েত তাঁকে বৌবাজারের বাসায় ডেকে আনেন। সেখানে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এরপর ৮ মে আবার ওই তরুণীকে বাসায় ডেকে এনে ধর্ষণ করেন কেফায়েত। এর চার দিনের মাথায় ১২ মে ওই তরুণীতে ডেকে নিয়ে তাঁর মুঠোফোনে থাকা তাঁদের ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলেন এবং তাঁকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেন ওই ওয়ার্ড কাউন্সিলর। একই সঙ্গে এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে তাঁকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ১৪ মে কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন বরিশাল নগরের কাউনিয়া থানায় ওই তরুণীর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করেন। পরে কাউনিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ হোসেন ওই তরুণীকে ফোন করে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তাঁকে পুরো ঘটনা জানান। সব শুনে আদালতে মামলার পরামর্শ দেন ওই এসআই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন আজ দুপুরে বলেন, ‘ওই তরুণীকে আমি চিনি না। তাঁর সঙ্গে আমার কোনো পরিচয়ই নেই। ১৫ রোজায় আমার কাছে একটি ফোন আসে। এ সময় তিনি আমাকে বলেন, “আমি জানি, আপনার বিয়ের জন্য বাসা থেকে মেয়ে দেখা হচ্ছে। আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই।” এভাবে ওই তরুণী আমাকে ফোনে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ ঘটনায় আমি কাউনিয়া থানায় একটি অভিযোগ করি। এরপরই ওই তরুণী আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন।’
তদন্তের মাধ্যমেই আসল ঘটনা উন্মোচিত হবে মন্তব্য করে কেফায়েত হোসেন বলেন, ‘আমি ওয়ার্ড কাউন্সিলর, তাই রাজনৈতিকভাবে আমাকে হয়রানি করছে একটি চক্র। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ মামলা করা হয়েছে।’