বরিশাল বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩৩ জনের কোভিড শনাক্ত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরিশাল বিভাগে গতকাল রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এটা এখন পর্যন্ত এই বিভাগে এক দিনের সর্বোচ্চ। 

নতুন ১৩৩ জন নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৫৮৫। এ ছাড়া কোভিডে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৩ জন।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিলে বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের সংখ্যা গড়ে ১৫ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। মে মাসে তা ১৯ থেকে ৪০-এর ঘরে পৌঁছায়। আর জুনের শুরুতেই তা ছিল ৭০। এরপর ৯৫, ৯৮। গতকল তা এক লাফে ১৩৩-তে পৌঁছাল।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জুনে সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ার প্রেক্ষাপটে বিভাগের চার জেলা সংক্রমণের দিক থেকে রেড মার্কে (লাল চিহ্নিত) রয়েছে। এসব জেলায় সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর লকডাউনের (অবরুদ্ধ) সুপারিশ করা হয়েছে বেশ কয়েক দিন আগে। এরই মধ্যে তার প্রক্রিয়া চলছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বিভাগে নতুন ১৩৩ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত বরিশালে, ৫২ জন। এ নিয়ে এই জেলায় মোট আক্রান্ত ৯২৪ জন। এ ছাড়া পটুয়াখালীতে নতুন ২৭ জনসহ মোট আক্রান্ত ১৯২ জন, ভোলায় নতুন ২৩ জনসহ মোট আক্রান্ত ১৩৯ জন, বরগুনায় নতুন ১৫ জনসহ মোট আক্রান্ত ১৩১ জন, পিরোজপুরে নতুন চারজনসহ মোট আক্রান্ত ১০৬ জন এবং ঝালকাঠি জেলায় নতুন ২২ জনসহ মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩।

২৪ ঘণ্টায় বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ৫২ জনের মধ্যে ৩৬ জনই বরিশাল নগরের বাসিন্দা। এ ছাড়া বিভাগে মোট আক্রান্ত ব্যক্তিদের সবচেয়ে বেশি বরিশাল জেলায়, ৯২৪ জন। তবে এর সিংহভাগই বরিশাল নগর এলাকার বাসিন্দা, যার সংখ্যা ৭১৩।

বিভাগে কোভিডে মারা গেছেন ৩৩ জন। এর মধ্য ওই ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়। তিনি ঝালকাঠির বাসিন্দা। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে বরিশালে সবচেয়ে বেশি, ১২ জন। এরপরে পটুয়াখালীতে ১০ জন, ঝালকাঠিতে চারজন, পিরোজপুরে তিনজন এবং বরগুনা ও ভোলা জেলায় ২ জন করে মারা যান। মে মাস পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হলেও বাকি ২৩ জন মারা যান জুনের ১৪ দিনে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরিশাল বিভাগে সংক্রমণের হার জুনে এতটা বেড়েছে যে সেটা এখন গভীর উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে। এ জন্য আমরা জুনের শুরুতেই কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করেছিলাম। তবে আজ বিভাগীয় প্রশাসন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যৌথভাবে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করবে। এরপর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল আরও বলেন, ‘এলাকাভিত্তিক লকডাউনের নির্দেশনা আমরা কয়েক দিন আগেই পেয়েছি। তবে এখনো মানচিত্র তৈরি হয়নি বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। আশা করি, আগামীকালের মধ্যেই মানচিত্র তৈরির কাজ শেষ হবে এবং আমরা এলাকাভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারব।’