বন্যার জমে থাকা পানিতে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি
সিলেটে সুরমা নদীর পানি উপচে নগরের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে গিয়েছিল। সপ্তাহজুড়ে শহরে ব্যাপক বন্যার পর গতকাল রোববার থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে প্রধান সড়কগুলো থেকে পানি নেমে গেলেও পাড়া-মহল্লায় এখনো পানি জমে আছে। এ পানি নর্দমায় মিশে কালো রং ধারণ করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ঘর থেকে সেচে বের করলেও বাড়ির বাইরে পানি রয়েই গেছে। এ কারণে বন্যা দিয়ে শুরু হওয়া ভোগান্তি বন্যার শেষেও শেষ হয়নি।
আজ সোমবার সকালে নগরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, নগরের তালতলা, জামতলা, মণিপুরি রাজবাড়ি, যতরপুর, মিরাবাজার, শাহজালাল উপশহর, মেন্দিবাগ, ছড়ারপাড় এলাকায় বেশ কিছু বাড়িঘর এখনো পানির নিচে। বাসিন্দাদের ঘরের সামনে এখনো হাঁটুপানি রয়ে গেছে। এ পানি কলো রং ধারণ করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তাই ওইসব এলাকার বাসিন্দারা পানিবাহিত রোগের শঙ্কায় আছেন।
নগরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা জিয়া ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘর থেকে বের হতে হলে ময়লা-পচা পানি মাড়িয়ে যেতে হয়। এ জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হন না। আবার বের হলে সারা দিনের সম্ভাব্য কাজ শেষ করে ঘরে ফেরেন। তিনি আরও বলেন, বের হওয়ার পর রিকশায় করে ঘরে ফেরা যায়, কিন্তু ঘর থেকে বের হলে পা দিয়ে পানি মাড়িয়ে যেতেই হবে। আগে পানি বেশি থাকায় ময়লা পানি আসত না। এখন পানি কমে যাওয়ায় ময়লা পানি কালো হয়ে গেছে।
তালতলা এলাকার বাসিন্দা স্বপ্না বেগম বলেন, পানি নেমে গেছে, কিন্তু ঘরের সামনে জমে আছে ময়লা পানি। এসব পানিতে ঘরের শিশুরা খেলা করতে চায়। এ জন্য তাদের নজরদারিতে রাখতে হয়। এ ছাড়া বন্যার পানিতে বিভিন্ন ময়লা–আবর্জনা ভেসে এসে ঘর ও আশপাশে জড়ো হয়েছে। জমে থাকা পানিতে জন্ম নিয়েছে মশাসহ নানা কীটপতঙ্গ।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল আলিম শাহ প্রথম আলোকে বলেন, পানি নেমে যাওয়ার পর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখার দল গঠন করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো এবং ময়লা দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তিনটি মেডিকেল টিম মাঠে আছে, প্রয়োজনে আরও গঠন করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া কিংবা অন্যান্য রোগের প্রকোপ দেখা যায়নি। এর কারণ বিশুদ্ধ পানি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। তবে পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর সে রোগগুলোর ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা আছে। সে জন্য মেডিকেল দল তৎপর।