বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে কাল টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার জাতির জনকের জন্মদিনের সব কর্মসূচি তাঁর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় করার ঘোষণা হয়েছে। ‘হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শিরোনামে সাত দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে এবার টুঙ্গিপাড়ায়।
এদিকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, শোভাবর্ধনসহ নানা কাজ করা হয়েছে। জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য সমাধিসৌধের ১ নম্বর গেটে বিশালাকৃতির প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। টুঙ্গিপাড়াসহ জেলায় নেওয়া হয়েছে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা।
রাষ্ট্রপতির প্রটোকল অফিসার মো. নবীরুল ইসলাম ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো পৃথক দুটি ফ্যাক্স বার্তায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি জানানো হয়েছে। সে অনুযায়ী, আগামীকাল সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বেলা ১১টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছাবেন। এরপর প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী সমাধিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি বেলা ১১টা ৫ মিনিটে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
বেলা ১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভায় যোগ দেবেন। বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিশু দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
আওয়ামী লীগ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, টুঙ্গিপাড়া শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে সপ্তাহব্যাপী লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। লোকজ মেলা চলবে ১৯ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ তোজাম্মেল হক বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বর্ণিল আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহব্যাপী লোকজ মেলায় ১০০টি স্টল করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য নিয়ে উদ্যোক্তারা এখানে অংশ নেবেন। এ ছাড়া এখানে বিশালাকৃতির প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। এই প্যান্ডেলে দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা গান গাইবেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় আসবেন। তাঁদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কর্মসূচি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের মূল থিম ‘টুঙ্গিপাড়া-হৃদয়ে পিতৃভূমি’
মুজিব বর্ষ উদ্যাপন জাতীয় সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেছেন, ‘আমাদের মূল থিম হচ্ছে টুঙ্গিপাড়া-হৃদয়ে পিতৃভূমি।’ টুঙ্গিপাড়া বাংলাদেশের সবার গ্রাম। কারণ, বঙ্গবন্ধু হচ্ছে বাঙালিদের সেই আরাধ্য পুরুষ, যার মাধ্যমে বাঙালি পৃথিবীতে প্রথম তার রাষ্ট্র পেয়েছে, সত্যিকারের আত্মপরিচয় পেয়েছে। তিনি আজ বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের ১ নম্বর গেটের সামনে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকগুলো কর্মসূচি আমরা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কিছু কিছু কর্মসূচি আমরা ভার্চ্যুয়ালি, কিছু অনলাইনে; অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করেছি। তারপরও আমরা কাজ করেছি, বেশ কিছু প্রকাশনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা আমাদের সার্বক্ষণিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়েছেন।’