বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেত্রীকে লাথি মেরে ভ্রূণ হত্যার মামলায় এসআই কারাগারে
বগুড়ায় ছাত্রলীগ নেত্রীর করা যৌতুক দাবি ও পেটে লাথি মেরে ভ্রূণ নষ্টের মামলায় পুলিশের উপরিদর্শক (এসআই) ইফতেখায়ের মো. গাউসুল আজমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন তিনি। আদালতের বিচারক নুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবির জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এসআই ইফতেখায়ের বগুড়ার কাহালুসহ একাধিক থানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার চেঁচড়া গ্রামে। তিনি বর্তমানে নওগাঁ জেলা পুলিশে কর্মরত। আর মামলার বাদী তমানিয়া আফরিন ওরফে তিমু (২২) বগুড়ার সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার টাউন কলোনি এলাকায়।
এসআই ইফতেখায়ের বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। ছাত্রলীগ নেত্রী তমানিয়া আফরিনের সঙ্গে তাঁর ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন রেখে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তমানিয়াকে বিয়ে করেন।
বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আশেকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এসআই ইফতেখায়ের বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। ছাত্রলীগ নেত্রী তমানিয়া আফরিনের সঙ্গে তাঁর ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন রেখে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে তমানিয়াকে বিয়ে করেন। তমানিয়া সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ইফতেখায়ের ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক না পেয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তমানিয়ার বাবার বাড়িতেই নির্যাতনের একপর্যায়ে পেটে লাথি মারলে গর্ভপাত হয়। পরে যৌতুক, নারী নির্যাতন ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগ এনে ইফতেখায়েরের বিরুদ্ধে তমানিয়া আদালতে মামলা করেন।
তদন্তে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নির্যাতন ও পেটে লাথি মেরে ভ্রূণ হত্যার সত্যতা মিলেছে।
আদালত শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে আদালত এসআই ইফতেখায়েরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ইফতেখায়ের হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন। গতকাল মঙ্গলবার জামিনের মেয়াদ শেষে আজ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২ হাজির স্থায়ী জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নির্যাতন ও পেটে লাথি মেরে ভ্রূণ হত্যার সত্যতা মিলেছে।