বংশী নদীর তীরে দখল উচ্ছেদের দাবিতে নৌকায় মানববন্ধন
দখল আর ভরাটে ঢাকার সাভারের ফুলবাড়িয়া থেকে নামাবাজার হয়ে নয়ারহাট পর্যন্ত বংশী নদীর অংশ এখন মৃত প্রায়। নদী ও তীরে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা। উচ্ছেদ নথি তৈরি করার পরেও জেলা প্রশাসন থেকে এসব স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় নদী ও নদীর জায়গা উদ্ধারে আন্দোলনে নেমেছে নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদ।
বংশী নদী ও নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে সাভার নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদ আজ শনিবার সাভার নামাবাজার এলাকায় বংশী নদীতে নৌকায় মানববন্ধনের আয়োজন করে। এর আগে থানা রোডে র্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক শ মানুষ এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন।
গতকাল সকাল থেকেই সাভার থানা রোডের পাশে মডার্ন প্লাজায় লোকজন জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১১টার দিকে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মডার্ন প্লাজার সামনে থেকে বের হয় র্যালি। র্যালিটি থানার সামনে বংশী নদীতে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে নদীতে ভাসমান ট্রলারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধন থেকে নদী ও নদীতীরের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন থেকে নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক বলেন, সাভারের ফুলবাড়িয়া থেকে নয়ারহাট পর্যন্ত বংশী নদী ও নদীর তীর দখল করে কয়েক শ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। সাভার নামাবাজর এলাকায় দখলপ্রবণতা সবচেয়ে বেশি। বাজারটিতে অন্তত তিন হাজার অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। ফুলবাড়িয়া এলাকায় একটি বহুতল পোশাক কারখানার প্রায় অর্ধেক নদীর মধ্যে। কিন্তু জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে এসব স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর পূর্বের গতিপথ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এর অন্যথা হলে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।
নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে বংশী নদীর দখলদারদের যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তাতে ৬২ জন দখলদারের নাম রয়েছে, যা অসম্পূর্ণ। ছোট হলেও ওই তালিকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি, সরকারি দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধির নাম রয়েছে। এই প্রভাবশালীদের পথ ধরে সাধারণ মানুষও নদীতে আবর্জনা ফেলে নদী দখল করে চলেছেন। প্রকাশ্যে দখলপ্রক্রিয়া চললেও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, প্রাথমিকভাবে বাধাও দেওয়া হয় না। তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গার তীর থেকে দেশের অনেক প্রভাবশালীদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও সাভারে কেন উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় না, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। অনতিবিলম্বে বংশী নদীর অবৈধ দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে তাঁদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা করতে হবে।