সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর
ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে মাছ শিকারের অভিযোগ
অন্যদিকে ধরমপাশায় চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের তিনটি স্থান মাছ ধরার জন্য কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করেছেন।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের একটি ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে মাছ ধরা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে গতকাল রোববার উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে আটক করেন।
অন্যদিকে ধরমপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের তিনটি স্থান মাছ ধরার জন্য কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করেছেন।
জগন্নাথপুরের ভূরাখালী, হালেয়া ও রাজনগর গ্রামের কৃষকেরা বলেন, নলুয়ার হাওরের ভূরাখালী রাখালগাছের তলা থেকে হালেয়া পর্যন্ত বেড়িবাঁধের অংশবিশেষ কেটে অবৈধভাবে জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। ভূরাখালী গ্রামের জহিরুল ইসলাম, রাজিব মিয়া, বাদশা মিয়া, সাইফুল মিয়া ও দুলু মিয়ার নেতৃত্বে একটি চক্র এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে এ কাজ করছেন। ১১ অক্টোবর তাঁরা (কৃষকেরা) এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
হালেয়া গ্রামের কৃষক মোবারক মিয়া বলেন, হাওরপাড়ের মানুষ বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় মাটিসংকটে পড়তে হয়। এভাবে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নষ্ট করলে তাঁরা মুশকিলে পড়বেন।
অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম বলেন, তিনি এর সঙ্গে জড়িত নন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপম দাস বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করেন। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ধরমপাশায় গতকাল ‘জয়শ্রী ইউনিয়নবাসী’র ব্যানারে জয়শ্রী বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, উপজেলার বাদে হরিপুর গ্রামের পেছনে চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) অধীন। গত অর্থবছরে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁধটি পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে দুই সপ্তাহ আগে এ বাঁধের তিনটি স্থান (পাঁচ থেকে সাত ফুট করে) কেটে দেওয়া হয়।
সপ্তাহখানেক ধরে জয়শ্রী ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার নাফিজের (৩০) নির্দেশে বাঁধের ওই তিন কাটা স্থানে নিষিদ্ধ ভিমজাল পেতে মাছ শিকার করা হচ্ছে। জাল পেতে মাছ শিকার করায় বাঁধের কাটা স্থানগুলো বড় হয়ে এখন ১৭ থেকে ২০ ফুট হয়ে গেছে। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জয়শ্রী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম, বাদে হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা আল মুজাহিদ, জয়শ্রী বাজারের ব্যবসায়ী শান্তু মিয়া প্রমুখ। ১২ অক্টোবর ‘ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে চলছে মাছ শিকার, সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
তবে শাহরিয়ার নাফিজ বলেন, এলাকায় তাঁর সুনাম নষ্ট করার জন্য এমন গুজব রটানো হচ্ছে।