ফরিদপুরে বরকত-রুবেলের ১২ বাস পোড়ার ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন

ফরিদপুরে আগুনে পুড়ে গেল পুলিশের জব্দ করা বরকত-রুবেলের মালিকানাধীন ১২টি বাস
ফাইল ছবি

দুই হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচার মামলায় গ্রেপ্তার ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান ওরফে রুবেলের ১২টি বাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে মামলা হয়েছে। বাসগুলো দুই ভাইয়ের মালিকানাধীন সাউথ লাইন পরিবহনের। এগুলো পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জব্দকৃত হিসেবে ফরিদপুর জেলা পুলিশের জিম্মায় ছিল।

গতকাল রাতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল গফফার বাদী হয়ে বাসগুলো পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে নাশকতা উল্লেখ করে মামলা করেছেন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।

এদিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার গতকাল এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) মো. ইমদাদ হোসেনকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. হেলালউদ্দিন। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে গঠিত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

অর্থ পাচার মামলার আদালতের মাধ্যমে সাউথ লাইন পরিবহনের ২২টি বাস আলামত হিসেবে জব্দ করেছিল সিআইডি ঢাকা। বাসগুলো ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামটে ওজোপডিকো কার্যালয়ের সামনে রাখা হয়। বাসগুলোর মধ্যে ১০টি সেড দিয়ে ঘেরা ছিল এবং ১২টি ওই জায়গার পাশে নিচু জমিতে রাখা ছিল। গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ১২টি বাসের ১টিতে আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন অন্য বাসে ছড়িয়ে পড়ে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, বাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটির বিভিন্ন দিক মাথায় রেখে তদন্তকাজ শুরু করা হয়েছে। বাসগুলোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত নৈশপ্রহরী শেখ মোহাম্মদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। যে বা যাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

এদিকে গতকাল জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির মাসিক সভা ছিল। ওই সভায় সভাপতি ছিলেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। সভার শুরুতে জেলা প্রশাসক বাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটি উল্লেখ করে বলেন, ফরিদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। কিন্তু বাসগুলো পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও রুবেল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি।

আরও পড়ুন

২০২০ সালের ১৬ মে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৮ মে মামলা করেন সুবল সাহা। এ ঘটনার জেরে ২০২০ সালের ৭ জুন পুলিশের বিশেষ অভিযানে ফরিদপুর-৩ আসনের সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের শহরের বদরপুরের বাড়ি আফসানা মঞ্জিল থেকে তাঁর উপস্থিতিতে বরকত-রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৬ জুন বরকত-রুবেলের নামে ঢাকার কাফরুল থানায় দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করে সিআইডি ঢাকা।