পুলিশের এপিসিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া সেই যুবক গ্রেপ্তার
হেফাজতে ইসলামের হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সাঁজোয়া যানে (এপিসি) আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
আজ শনিবার বিকেল চারটায় গাজীপুর সদরের ভূঁইয়াপাড়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এটিইউ বলছে, গত ২৮ মার্চ হরতালের দিনে হেফাজত সমর্থকদের নাশকতার ফুটেজ দেখে তাঁকে শনাক্ত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম জাকারিয়া আহমেদ ওরফে প্রীতম (২৭)। তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের নোয়াগাঁওয়ের পশ্চিমপাড়ার। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। বাবা মারা যাওয়ার পারিবারিক ট্রাক্টর চালিয়ে তিনিই সংসার চালাতেন।
এটিইউর অপারেশনস উইংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাকারিয়া পুলিশের এপিসির ওপরে উঠে গ্যালনভর্তি পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর গুলিবিদ্ধ হলে তিনি পালিয়ে ঢাকার উত্তরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফিরে এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন। পুলিশের অব্যাহত অভিযানে ভয় পেয়ে জাকারিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পালিয়ে মা এবং ছোট ভাইকে নিয়ে গাজীপুরে চলে আসেন।
শাখাওয়াত হোসেন জানান, গাজীপুরে সাড়ে চার হাজার টাকা দিয়ে একটি বাসা ভাড়া নেন জাকারিয়া। এখানেই আরও অন্তত দুই বছর তাঁর থাকার পরিকল্পনা ছিল। এই সময়ের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার চিন্তা ছিল তাঁর।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়। ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদে সংঘর্ষের জের ধরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মাদ্রাসার ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে এবং থানাসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা হয়। সেখানে গুলিতে চারজন মারা যান। এর জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভে নামেন মাদ্রাসার ছাত্ররা। সেখানে রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এরপর ২৭ ও ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা ও সরকারি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটে। সেখানে তিন দিনে গুলিতে প্রাণ হারান সরকারি হিসাবে ১৩ জন, আর হেফাজতের দাবি ১৫ জন। ওই তিন দিনের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭৭টি মামলার খবর গণমাধ্যমে এসেছে। এসব মামলায় আসামি ৪৯ হাজারের বেশি।