পিরোজপুরে সাংবাদিক আমীর খসরুর মায়ের লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি ‘হত্যা’
পিরোজপুর শহরের সিআইপাড়া মহল্লার বাড়ি থেকে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আমীর খসরুর মা সিতারা হালিমের (৭৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের মেঝেতে তাঁর লাশ পড়ে ছিল।
স্বজনদের দাবি, দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে সিতারা হালিমকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘরের মালামাল লুট করেছে। সিতারা হালিম পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ প্রয়াত আবদুল হালিম হাওলাদারের স্ত্রী।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর শহরের সিআইপাড়া মহল্লার বাড়িতে সিতারা হালিম একা থাকতেন। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকতেন তিনি। গতকাল সকাল আটটার দিকে রং করার জন্য ওই বাড়িতে যান আবদুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঘরের কলবেল বারবার বাজালেও ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাননি। এরপর আবদুল কুদ্দুস বাড়ির নিচতলায় থাকা ভাড়াটেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাঁরা দোতলায় গিয়ে ডাকাডাকি করেও ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে দোতলার পেছনের দিকে গিয়ে একটি দরজা খোলা দেখতে পান। এরপর তাঁরা খোলা দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকে একটি কক্ষের মেঝেতে সিতারা হালিমের লাশ দেখতে পান। এ সময় ঘরের আলমারি ও জিনিসপত্র তছনছ করা ছিল।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে সিতারা হালিমের বড় মেয়ে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সালমা আরজু ওই বাড়িতে যান। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পিরোজপুরের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন ও পিরোজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পিবিআইএর ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সিতারা হালিমের বড় মেয়ে সালমা আরজু প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রোববার রাতে মায়ের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। তখন মা বলেছিলেন, নামাজ আদায় করবেন। আজ সকালে মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে গিয়ে দেখেন, মায়ের লাশের পাশে একটি তসবি পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে মাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘরের মালামাল চুরি করেছে। ঘরে একটি স্যালাইনের পাইপ পাওয়া গেছে। ওই পাইপ দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।
সিতারা হালিমের বড় জামাতা পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের উপাধ্যক্ষ মজিবর রহমান বলেন, ঘরের মালামাল তছনছ করা ছিল। চোরেরা তাঁর শাশুড়িকে হত্যা করে ঘর থেকে নগদ টাকা, গয়না ও মালামাল লুট করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সিতারা হালিমের গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে সিতারা হালিমকে রশি বা স্যালাইনের পাইপ দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করতে পারেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।