পারাপারের সময় পদ্মা সেতুতে না নামতে মাইকিং, টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী
পদ্মা সেতুতে মানুষের হাঁটা-চলা, ঘোরাঘুরি বন্ধ করা ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পারাপারের সময় পদ্মা সেতুতে না নামার জন্য টোল প্লাজা এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। আজ সোমবার সকাল থেকে সেতুতে টহল দিচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে সেতুতে মোটরসাইকেল পারাপার নিষিদ্ধ করার পর জাজিরা প্রান্তে নাওডোবা টোল প্লাজায় শৃঙ্খলা ফিরেছে। আজ সোমবার সকাল থেকে জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে কোনো যানবাহনের জট নেই। ব্যক্তিগত গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক সরাসরি টোল দিয়েই বাধাহীনভাবে সেতু পার হতে পারছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রোববার মোটরসাইকেল আরোহীদের কারণে কিছু বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। দুটি প্রাণ ঝরেছে। বাধ্য হয়ে সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখতে হয়েছে। সেতুসংশ্লিষ্ট সব মহল মিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেতুর নিরাপত্তা, মানুষের নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে। তাই সোমবার সকাল থেকে সেতুতে কয়েকটি দলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল সকাল ছয়টায় পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর হুড়মুড় করে সেতুতে মোটরসাইকেল উঠে পড়ে। সারা দিনই মোটরসাইকেল সেতু পারাপার হয়েছে। বিকেল চারটার পর থেকে জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে কয়েক হাজার মোটরসাইকেল জড়ো হয়। এ কারণে অন্যান্য যানবাহন সেতুতে উঠতে সমস্যা হয়। টোল প্লাজার সামনে থেকে সংযোগ সড়কে অন্তত দুই কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিকে পারাপারের সময় সেতুতে নেমে মানুষজন ছবি তুলেছেন, হেঁটে বেড়িয়েছেন। অনেকে টিকটক ভিডিও বানানোর চেষ্টা করেছেন। এক তরুণ সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে তার ভিডিও-ছবি ফেসবুকে দিয়েছেন। পুলিশ অবশ্য ওই তরুণকে গতকালই গ্রেপ্তার করেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে রাতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণ আহত হন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা মারা যান। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রোববার রাতে মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, সেনা কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও সেতুর নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে জাজিরার সার্ভিস এরিয়া-২-এ সভা করেন। সেতুতে নিরাপদে যানবাহন চলাচল, নিরাপত্তা জোরদার, দুর্ঘটনা রোধ করার বিষয় দিকনির্দেশনা দেন। তখন সিদ্ধান্ত হয়, সেতুতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দেবেন।
শরীয়তপুর ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (নাওডোবার দায়িত্বে থাকা) আরিফুর রহমান বলেন, সকাল থেকে টোল প্লাজা, সেতুর ওপর পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। কোনো মানুষ যাতে গাড়ি থামিয়ে সেতুতে নামতে না পারে ও উচ্চ গতিতে গাড়ি চালাতে না পারে, তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।