পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো তালা ঝুলছে, প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা

১৭ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আজ রোববার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রাখে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনছবি: প্রথম আলো

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্ররের কার্যালয়ে আজ রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো তালা ঝুলছে। এ কারণে রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রম্ম ক্যাম্পাসে গেলেও কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

নির্ধারিত রিজেন্ট বোর্ড না করে ১০২ জনের নিয়োগপ্রক্রিয়া ও পদোন্নতি ঝুলিয়ে রেখে উপাচার্য এম রোস্তম আলী মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ আগে চুপিসারে ক্যাম্পাস ছাড়েন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদ রেজিস্ট্রারকে কার্যালয় থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এর পাশাপাশি তারা ১৭ দফা দাবি তুলে ধরেছে। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত রেজিস্ট্রার কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিষদের নেতারা।

আজ সকালে সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে, নির্মাণযজ্ঞ চলছে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে। ক্লাস-পরীক্ষাও চলছে। তবে প্রশাসনিক ভবন স্থবির। রেজিস্ট্রার ও উপাচার্যের কার্যালয় তালাবদ্ধ। অফিসকক্ষের বারান্দায় ঘুরছেন কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।

কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা বলেন, গতকাল সকালে তালা ঝুলানোর পর রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রম্ম আর কার্যালেয় প্রবেশ করতে পারেননি। দিনভর তিনি প্রশাসনিক ভবনের নিচের একটি কক্ষে বসে ছিলেন। আজ সকালেও তিনি যথাসময়ে ক্যাম্পাসে আসেন। তবে তাঁকে কর্মকর্তারা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেননি। পরে তিনি অন্য ভবনে চলে যান।

জানতে চাইলে কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হোসেন বলেন, ‘আমরা ১৭ দফা দাবি দিয়েছি। দাবির বিষয়ে এখনো আমাদের সঙ্গে কেউ কোনো কথা বলেননি। তাই তালাও খোলা হয়নি। দাবি না মানা পর্যন্ত কার্যালয় তালাবদ্ধই থাকবে।’

আরও পড়ুন

যোগাযোগ করা হলে রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) বিজন কুমার ব্রম্ম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব মিলিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছি। আমাকে কার্যালয় ছাড়তে বলা হয়েছে। আমি ছেড়েছি। উপাচার্য মহোদয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি নির্দেশনা দিলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

আগামী ৬ মার্চ উপাচার্যের দায়িত্বকালের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। এর আগে তিনি ১০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৬০তম সভা ডাকেন। সভায় ৬১টি আলোচ্য সূচির মধ্যে ৪২টি ছিল নিয়োগসংক্রান্ত। এতে ১০২ জনের নিয়োগপ্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। নিয়োগসংক্রান্ত জটিলতায় তিনি সভা স্থগিত করেন। পরে তিনি নিজেই ২৪ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট বোর্ডের সভা ডেকে ক্যাম্পাস ছাড়েন। এর ১৩ দিন পর ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ৮টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এরপর দুই দিন ক্যাম্পাসে থেকে তিনি ক্যাম্পাস ছাড়েন।