পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে সমাবেশ
সিলেটের পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনকে অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি আখ্যায়িত করে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির আগে থেকে পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার শঙ্কায় পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ১০ লাখ পাথরশ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন কয়েক লাখ মানুষ। বিপর্যয় ঠেকাতে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়। ‘বৃহত্তর সিলেট পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আবদুল জলিল। সদস্যসচিব নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক মালিক গ্রুপ সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল, জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার, জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি আবুল হোসেন, বিমানবন্দর থানা স্টোন ক্রাশার মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি নাসির উদ্দিন, জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া, সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রুনু মিয়া, বারকি শ্রমিক সমবায় সমিতির সভাপতি মজনু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আউয়াল মিয়া, পাথর উত্তোলন ও বহনকারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন সভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
বক্তারা বলেন, যুগ যুগ ধরে পাথর আহরণের মাধ্যমে কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান পাথর কোয়ারি। এই কোয়ারি বন্ধের কারণে সৃষ্ট সংকটে শুধু শ্রমিক নন, পাথর ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত ১০ লাখ মানুষ। পাথর কোয়ারিতে পাথর আহরণ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বংশপরম্পরায় জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। পাথরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হাজারো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং পাথর পরিবহনে সম্পৃক্ত লাখ লাখ পরিবহন শ্রমিক-মালিক তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। পাথর আহরণ করতে না পেরে অর্ধাহারে–অনাহারে জীবন যাপন করছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীরা ব্যাংকঋণে জর্জরিত দেউলিয়া হয়ে ফেরার জীবন যাপন করছেন। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনে কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য প্রথম আলোকে বলেন, পাথর কোয়ারি খোলার বিষয়টি আর স্থানীয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের মধ্যে নেই। পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিবেচনায় পাথর আহরণ না করে আমদানি করে চাহিদা পূরণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই অবস্থায় করোনাকালের আগে থেকে পাথর কোয়ারি বন্ধ করে উপজেলা প্রশাসন পাথরশ্রমিকদের বিকল্প পেশায় উদ্বুদ্ধ করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।