২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

পাঠাগারের সাইনবোর্ড দিয়ে সরকারি জমি দখল

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গলাচিপা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরখালী মঙ্গলবাড়ীয়া বাজারে পাউবোর জমি দখল করে নির্মিত চায়ের দোকানছবি: প্রথম আলো

‘শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগার’ নাম ব্যবহার করে সরকারি জমি দখলে নিয়ে চায়ের দোকান দিয়েছেন মো. আয়ুব মৃধা নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার দক্ষিণ চরখালী মঙ্গলবাড়ীয়া বাজারে।

স্থানীয় লোকজন ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা বলেন, পাঠাগারের নাম থাকলেও সেখানে কোনো বই নেই। সেখানে মাদকসেবীরা আড্ডা দেয়। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা বলেন, আয়ুব মৃধা একসময় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই সুবাদে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকালে ঠিকাদারের কাছ থেকে পুরোনো কিছু টিন দিয়ে প্রথমে দক্ষিণ চরখালী মঙ্গলবাড়ীয়া বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের ঢালে সরকারি আধা শতাংশ জমি দখলে নেন। পরে শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগারের নাম ব্যবহার করে দলীয় লোকজনসহ বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে ঘর নির্মাণ করেন।

ওই সাইনবোর্ডে পাঠাগার স্থাপনের তারিখ ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আয়ুব মৃধা বলেন, ‘আসলে পাঠাগারে এখনো বই সংগ্রহ করতে পারিনি। কাজেই পাঠাগারটি সেভাবে চালু হয়নি। আর যেহেতু পাঠাগারটি আমি দেখাশোনা করছি, তাই সামনে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দিয়েছি। এতে পাঠাগারটি দেখাশোনা করার পাশাপাশি নিজের কিছু আয় হচ্ছে। মাদকাসক্তদের আড্ডার অভিযোগ সঠিক নয়।’ যে জমিতে ঘর তুলেছেন, তা সরকারি জমি বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

গলাচিপা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাম হাওলাদার বলেন, শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগার নামে ঘর তোলা হলেও দীর্ঘদিন ধরে পাঠাগারের কোনো কার্যক্রম ছিল না। হঠাৎ এবার আয়ুব মৃধা পাঠাগারের ঘরে চায়ের দোকান দিয়ে বসেন এবং পাঠাগারের ভেতরের কক্ষে লোকজনের বসার ব্যবস্থা করেন।

সম্প্রতি সরেজমিন শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগারে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক ভেতরে বসে টিভিতে বাংলা সিনেমা দেখছেন। পাঠাগারে কোনো বই নেই। তবে রয়েছে একটি টিভি আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। এ ছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ছবি রয়েছে পাঠাগারে। আর ঘরের সামনে খোলা চায়ের দোকান। সেখানে একটি বেঞ্চে লোকজনের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে বিষয়টি শুনেছি। এভাবে নাম ব্যবহার করে দখল খুবই খারাপ এবং এটা মেনে নেওয়া হবে না। দলীয়ভাবেই এটা বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

পাউবোর গলাচিপা উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিরাজ গাজী প্রথম আলোকে বলেন, বেড়িবাঁধের ঢাল সরকারি জমি। সেখানে কৌশল করে দখলে নিতে সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে অবৈধ দখলে বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।