পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ
ন্যায়বিচার নিশ্চিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন পরিকল্পনামন্ত্রী
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়ার (৪০) মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। কারও সঙ্গে এমনটি হওয়া উচিত নয়। দেশে আইন আছে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। ঘটনার তদন্ত চলছে। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। তিনি পুলিশ বা কর্মকর্তা যে–ই হন, এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।’
আজ শুক্রবার বিকেলে পরিকল্পনামন্ত্রী শান্তিগঞ্জের শত্রুমর্দন গ্রামে উজির মিয়ার বাড়িতে যান। তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মন্ত্রী কথা বলেন এবং তাঁদের সান্ত্বনা দেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন। পরিকল্পনন্ত্রীর বাড়িও শান্তিগঞ্জে। তিনি সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ।
উজির মিয়ার মা, স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সরকার চায় না, বিনা কারণে দেশের একজন মানুষও হয়রানির শিকার হোক। সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে আমি বিষয়টি দেখভাল করব। তবে সবকিছু আইনি প্রক্রিয়া মেনে হতে হবে। তদন্ত হচ্ছে। প্রতিবেদন আসুক। প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এম এ মান্নান বলেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) দুজনের সঙ্গে কথা বলবেন। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনার শেষ দেখতে চান তিনি। তবে কোনো কুচক্রী মহলের উসকানিতে কেউ যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটান, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেন তিনি।
উজির মিয়ার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, উজির মিয়া ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়ি থেকে উজির মিয়াকে ধরে নিয়ে যায় শান্তিগঞ্জ থানার পুলিশ। থানায় নিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরদিন তাঁকে একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ওই দিনই আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পান তিনি। বাড়িতে আসার পর উজিরের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এরপর উজির অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাঁকে আবার বাড়িতে আনা হয়। গত সোমবার সকালে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের দাবি, শান্তিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আক্তারুজ্জামান, দেবাশীষ সূত্রধর ও পার্ডন কুমার সিংহ উজির মিয়াকে হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করেছেন। অভিযুক্ত এসআই দেবাশীষকে জেলার দিরাই থানায় বদলি করা হয়েছে।