নোয়াখালীতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল এক সপ্তাহ
নোয়াখালী পৌরসভা ও সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে লকডাউনের মেয়াদ আরও সাত দিন (২৫ জুন-০২ জুলাই) বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে জেলার বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভা এবং উপজেলার একলাশপুর ও মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নোয়াখালী পৌরসভা ও সদর উপজেলার চলমান তৃতীয় সপ্তাহের লকডাউন ২৫ জুন রাত ১২টায় শেষ না হয়ে ২ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। একইভাবে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভা, উপজেলার একলাশপুর ও মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নে এক সপ্তাহের লকডাউন কার্যকর হবে আগামী শনিবার সকাল ছয়টা থেকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।
টানা তৃতীয় সপ্তাহের লকডাউনের ফলাফল নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, লকডাউন ঘোষণা করা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। সংক্রমণের হার আরও ব্যাপক হারে বাড়ত। আগামী সপ্তাহের লকডাউন আরও কঠোর করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সব ধরনের যানবাহন, দোকানপাট, শপিং মল, চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে পণ্যবাহী গাড়ি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি এবং অনুমোদিত গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকবে না। এ ছাড়া সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও কাঁচাবাজার খোলা থাকবে। ওষুধের দোকান স্বাভাবিক নিয়মে খোলা থাকবে। খাবারের দোকান থেকে খাবার কিনে নিয়ে খাওয়া যাবে।
সূত্র জানায়, লকডাউনের আওতাধীন এলাকাগুলো হলো নোয়াখালী পৌরসভা এবং সদর উপজেলার কাদিরহানিফ, নোয়ান্নই, বিনোদপুর, নোয়াখালী ইউনিয়ন, নেয়াজপুর ও অশ্বদিয়া এবং বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভা, উপজেলার মীরওয়ারিশপুর ও একলাশপুর ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের অভ্যন্তরে সব ধরনের দোকানপাট, যানবাহন বন্ধ থাকবে। বাইরে থেকে পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া কোনো যানবাহন এসব এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না।
জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব ও জেলা সিভিল সার্জন চিকিৎসক মাসুম ইফতেখার প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউন ঘোষণার আগে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ছিল ৩২-৩৮ শতাংশ। গত তিন সপ্তাহের লকডাউনে সংক্রমণের হার ছিল সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ২৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। এটি লকডাউনের অন্যতম সফলতা বলে দাবি করেন তিনি।
গত ঈদুল ফিতরের পর নোয়াখালীতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ৫-১১ জুন প্রথমে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে। এরপর ১০ ও ১৭ জুন দুই দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু তৃতীয় সপ্তাহেও সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের নিচে না নামায় আজকের বৈঠকে আরও এক সপ্তাহ লকডাউন বলবৎ রাখার এবং নতুন করে বেগমগঞ্জের তিনটি এলাকাকে লকডাউনের আনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।