সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্দেশ দিলে কাদের মির্জার গায়ের চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে পায়ে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘মির্জা আগুনে হাত দিয়েছে। হাত পুড়ে যাবে। অহংকার বেশি দিন টেকে না।’
আজ সোমবার ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে মেজবাউল হায়দার এই মন্তব্য করেন। কাদের মির্জার ‘কুরুচিপূর্ণ মিথ্যাচারের’ প্রতিবাদে দাগনভূঞার এয়াকুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর কাইয়ুম পাটোয়ারী বাড়ির সামনে ফেনী-বসুরহাট সড়কে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানটি থেকে সেতুমন্ত্রীর ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার বাড়ির দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার।
সভাস্থলের অদূরেই বসুরহাট পৌর এলাকায় মির্জা কাদের ও তাঁর প্রতিপক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসন। তবে ফেনীর দাগনভূঞা এলাকা বা সমাবেশ এলাকা ১৪৪ ধারা জারি এলাকার বাইরে ছিল। সমাবেশে ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে যানবাহনে করে দলের নেতা–কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন। এ প্রতিবাদ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুর থেকে ফেনী-বসুরহাট সড়কে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করেনি।
‘সত্যবচনে’ আলোচিত কাদের মির্জা শুরু থেকেই নোয়াখালীর সাংসদ একরাম চৌধুরীর পাশাপাশি ফেনীর স্থানীয় সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ ও ফেনী পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে আসছেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতারা কাদের মির্জার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন। মির্জা কাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার ও মেয়র পদ থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত দাগনভূঞাবাসী রাজপথে থাকবে বলেও সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁদের বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ‘কাদের মির্জা আমেরিকায় গিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে মিটিং করেছেন। তারেক জিয়ার সঙ্গে মিটিং করেছেন। দিনের পর দিন নেশাগ্রস্ত হয়ে আবোলতাবোল বকছেন। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপিদের বিরুদ্ধে সারাক্ষণ মিথ্যাচার করছেন। বসুরহাট পৌরসভায় বসে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি বিএনপি থেকে নির্বাচন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মাফ করলে তবেই ফেনীবাসী তাঁকে ক্ষমা করতে পারে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, কোম্পানীগঞ্জের মানুষ অনেক আশা–ভরসা নিয়ে কাদের মির্জাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন। মির্জার লোকজন কোম্পানীগঞ্জে অনেক আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীকে খুন করেছে। সাংবাদিক বুরহানকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের বহু নেতা–কর্মীকে মারধর নির্যাতন করে এলাকাছাড়া করেছে।
বক্তারা কাদের মির্জাকে একজন ‘পাগল ও উন্মাদ’ আখ্যায়িত করে তাঁকে পাবনার মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর আহ্বান জানান।
দাগনভূঞা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ, ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলিম, ফেনী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির, ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক সুশেন চন্দ্র শীল, জেলা আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ, ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদা, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, দাগনভূঞা পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খান, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আহমেদ রিয়াজ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার প্রমুখ।
‘সত্যবচনে’ আলোচিত কাদের মির্জা শুরু থেকেই নোয়াখালীর সাংসদ একরাম চৌধুরীর পাশাপাশি ফেনীর স্থানীয় সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ ও ফেনী পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে আসছেন। মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে দাগনভূঞায় তাঁর গাড়িবহরে হামলার জন্যও কাদের মির্জা তাঁদের দায়ী করেন। এসব ঘটনায় ফেনী আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।