নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পর ম্যানহোল থেকে ২ নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার

লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্প এলাকায় নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পর একটি কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের ম্যানহোল থেকে দুই নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে ম্যানহোল থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তিদের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের ধারণা, দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধে ও মাথায় আঘাত করে হত্যার পর লাশ ম্যানহোলে রেখেছিল।

ওই দুই নৈশপ্রহরী হলেন সদর উপজেলার সরলপুর গ্রামের আবদুল হান্নান (৪৮) ও শিবগঞ্জ উপজেলার নামা মহাস্থানগড় এলাকার শামসুল ইসলাম (৬০)। এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাতে ডিউটি করতে এসে ভোর চারটার দিকে তাঁরা নিখোঁজ হন।

কারখানা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার মাসুদ অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের কারখানায় ওই দুই নৈশপ্রহরী কাজ করতেন। বুধবার দিবাগত রাতে ডিউটি করতে এসে ভোর চারটার দিকে তাঁরা নিখোঁজ হন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। পরে শুক্রবার বিকেলে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে কারখানার তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের ম্যানহোলে লাশ খুঁজে পান কারখানার লোকজন। পরে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

বগুড়ার ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুজন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি এবং এ ঘটনায় কাউকে আটক করাও সম্ভব হয়নি।

মাসুদ অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (মেটাল কারখানা) অন্যতম মালিক সাজ্জাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিনের বেলা হান্নানের মুঠোফোন নম্বর থেকে পাঠানো খুদে বার্তায় নিখোঁজ দুজনকে ফিরে পেতে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয় এবং লালমনিরহাট রেলস্টেশন এলাকায় টাকা পৌঁছে দিতে বলা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পরে শুক্রবার সকালে একই নম্বর থেকে আরেকটি বার্তা পাঠানো হয়। সেখানে নিখোঁজ দুজনের ভাগ্যে বড় বিপদ আছে বলে জানানো হয়। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে কারখানার তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের ম্যানহোল থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার হয়।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আলী হায়দার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুই নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় কারখানা মালিক যে খুদে বার্তার কথা বলেছেন, সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।