সেই মসজিদের সর্বত্র পোড়া চিহ্ন, এলাকায় গ্যাস বন্ধ
শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের সময় মসজিদে ৫০ জনের মতো মুসল্লি ছিলেন। তাঁদের সবাই কমবেশি দগ্ধ হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বায়তুস সালাত জামে মসজিদে শনিবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা গেল শুধু পোড়া চিহ্ন। মসজিদের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মসজিদের থাই জানালার কাচ, ভাঙা টাইলসসহ নানা জিনিস। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা এখনো ঘটনাস্থলে আছেন। ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে চার তলা মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে পশ্চিম তল্লার আশপাশের এলাকার গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। রান্না-খাওয়া নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
গ্যাস না থাকা বিষয়ে পশ্চিম তল্লা এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনার পর মধ্য রাত থেকে তাদের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। ওই এলাকার বাসিন্দা বেকারী ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গ্যাস না থাকায় হোটেল থেকে সকালের খাবার কিনে খেতে হয়েছে তাঁর মতো অনেককেই। সোনিয়া নিজাম নামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘না খেয়ে তো থাকা যাবে না। এখন লাকড়ির ব্যবস্থা করে রান্নার কাজ সারতে হবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের লিকেজের অভিযোগ পেয়ে তাদের একটি দল কাজ করছে। দুর্ঘটনা এড়াতে ওই এলাকার আশপাশে গ্যাসের সরবরাহ প্রেশার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার মসজিদটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মসজিদের ভেতরে থাকা ছয়টি এসির সব কটি পুড়ে যায়। ফ্যান, বিদ্যুতের তার, প্যানেল বোর্ডসহ সবকিছু পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণের সময় মসজিদে ৫০ জনের মতো মুসল্লি ছিলেন। তাঁদের সবাই কমবেশি দগ্ধ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১১ জন। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ ব্যক্তিদের বেশির ভাগের শরীরের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ পুড়ে গেছে। তাঁদের বেশির ভাগের অবস্থা আশঙ্কাজনক।