নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ীর মৃত্যু, এলাকাবাসীর চাপে ১৩ জন কোয়ারেন্টিনে
নারায়ণগঞ্জে শুক্রবার দিবাগত রাতে ফয়সাল সুজন (৪৪) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও স্বাস্থ্য বিভাগের ভাষ্য, তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে আগে থেকে ঠান্ডা-জ্বর ও শ্বাসকষ্ট থাকায় এলাকাবাসীর ধারণা, সুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন। তাঁদের চাপে সুজনের পরিবারের আট সদস্যসহ ১৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে।
ফয়সালের বাড়ি শহরের বাবুরাইল এলাকায়। তিনি শহরের দুই নম্বর রেল গেট এলাকার বর্ষণ সুপার মার্কেটে তৈরি পোশাকের ব্যবসা করতেন।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফয়সাল সুজন এক সপ্তাহ ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ঠান্ডা-জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। মাঝে একদিন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। এরপর থেকে বাড়িতেই ছিলেন। শুক্রবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সুজনের মুখ দিয়ে রক্ত উঠেছিল। উপসর্গ দেখে চিকিৎসকেরা বলেন, তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ মোস্তফা আলী বলেন, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই ফয়সাল সুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের ধারণা। কিন্তু এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাই ওই পরিবারের লোকজন ও ভাড়াটিয়াসহ ১৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
ফয়সালের মৃত্যুর পর এলাকার অনেকেই সন্দেহ করতে থাকেন, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এলাকার লোকজন লাশের নমুনা নিয়ে পরীক্ষার দাবি জানান। নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। খবর পেয়ে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ মোস্তফা আলী পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িতে যান। পরে এলাকাবাসীর চাপে ওই পরিবারের আটজনসহ মোট ১৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ জানান, ফয়সাল ঠান্ডা, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলে তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, তিনি করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু চিকিৎসক উপসর্গ দেখে বলেছেন, হৃদ্রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বাদ জোহর পাইকপাড়া বড় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। ওই পরিবারসহ ১৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।