কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদী থেকে আরও এক রোহিঙ্গা শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাফ নদীর হ্নীলা ইউনিয়নের ফুলেরডেইল এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।
আজ উদ্ধার হওয়া লাশটি উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা জানে আলমের (৩১) মেয়ে নুর সাইদার (৫)। এর আগে গত শনিবার জানে আলমের স্ত্রী সমজেদা বেগম (২৬) এবং দুই মেয়ে রশিদা বেগম (৩) ও ছলমা বিবির (১) লাশ নাফ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। নুর সাইদাকে নিয়ে নাফ নদী থেকে জানে আলমের পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো জানে আলম নিখোঁজ।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে নদীর হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী-মৌলভীবাজার এলাকায় দুই শিশু ও এক নারীর লাশ দেখেন স্থানীয় লোকজন। পরে দুপুরের দিকে ঘটনাস্থলে এসে লাশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
লাশগুলোর সঙ্গে সমজেদা বেগম ও জানে আলমকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) দেওয়া দুটি পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। ওই পরিচয়পত্র দেখে লাশগুলোর পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ ও স্বজনেরা বলছেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে মিয়ানমারে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়ে নৌকাডুবিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। তারা প্রায়ই উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর ক্যাম্প থেকে মিয়ানমারে জানে আলমের মায়ের কাছে বেড়াতে যেত।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ পর্যন্ত তিন শিশু, এক নারীসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা রোহিঙ্গা নাগরিক। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে রোহিঙ্গার ঢল শুরু হয়। তখন থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালান ঠেকাতে নাফ নদীতে নৌকা চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার। জেলেদের নৌকায় করে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ও মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে। মূলত এই অভিযোগে তখন থেকে এই নদীতে সব ধরনের মাছ ধরাও বন্ধ। তবে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এখনো রাতে রোহিঙ্গারা নৌকায় দুই দেশে যাতায়াত করেন। মিয়ানমার থেকে মাদক পাচারও অব্যাহত রয়েছে।