ধানখেত থেকে উদ্ধার নবজাতককে দত্তক নিতে চান অনেকে
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ধানখেত থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকটি (মেয়ে) ভালো আছে। বর্তমানে সে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নবজাতকদের বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্রে (স্ক্যানু) চিকিৎসাধীন। সেখানে নিজের শিশুদের চিকিৎসা নিতে আসা মায়েরা নবজাতকটিকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন।
জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে থাকা ওই নবজাতকটিকে অনেকেই দত্তক নিতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন। আজ শনিবার সকালে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মনোয়ারুল ইসলাম জানান, শিশুটির শরীরে জোঁকে ক্ষত করার কারণে ওষুধের ডোজ সম্পন্ন করতে পাঁচ দিন সময় লাগবে। চিকিৎসা শেষে জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে।
হাসপাতালে নিজেদের শিশুর চিকিৎসা নিতে আসা সুইটি বানু ও সাথী আক্তার নামে দুজন মা পর্যায়ক্রমে শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন। এ ছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তরের বোদা উপজেলা কার্যালয়ের সমাজকর্মী আসমাউল হাসান শিশুটির সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন। নবজাতকটি উদ্ধারকারী নারী নাসিমা বেগমও হাসপাতালে শিশুটির সঙ্গে রয়েছেন।
নাসিমা বেগম বলেন, তাঁর দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। শিশুটিকে যেহেতু তিনি উদ্ধার করেছেন, প্রয়োজনে তিনিই লালন-পালন করবেন।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের খুদেবার্তা দিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে লিখিত আবেদন গ্রহণ করা হবে। শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হলে জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভা আহ্বান করে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়নের আওকারীপাড়া এলাকার একটি ধানখেতের আল থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করেন নাসিমা বেগম (৪৫)।
পরে গ্রামবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোলেমান আলী ও বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্থানীয় লোকজনের ধারণা, শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই কেউ ধানখেতের আলে ফেলে রেখে গেছে। আশপাশে খোঁজ নিয়ে নবজাতকটির কোনো স্বজনকে পাওয়া যায়নি।