ধলাইতীরে ‘চিপ পাথর’ তোলার হিড়িক বন্ধে অভিযান
পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে পড়েছে বালুর আস্তরণ। বালু সেচে ‘চিপ পাথর’ (ছোট সিঙ্গেল পাথর) আহরণ করতে চলছে যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি। পাইপ বসিয়ে অবৈধ যন্ত্র দিয়ে চিপ পাথর তোলা বন্ধে আজ বুধবার অভিযান চালিয়েছে টাস্কফোর্স। অভিযানে ১০টি শ্যালো মেশিনসহ ১ হাজার ফুট পাইপ ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় পাথর পরিবহনে ব্যবহৃত ১৭টি ট্রাক্টর ও ৫টি নৌকাও জব্দ করা হয়।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবহমান ধলাই নদের সেতু এলাকায় বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ অভিযান হয়। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্যের নেতৃত্বে এই অভিযানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যসহ পুলিশও অংশ নেয়।
ধলাই সিলেটের অন্যতম সীমান্ত নদ। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জির পাদদেশ থেকে ধলাই নেমে এসেছে বাংলাদেশে। বর্ষাকালে এই নদ দিয়ে পাহাড়ি ঢল নামলে বালু-পাথরের স্তর জমা হয়। এবারের পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদের উৎসমুখে প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে নতুন পাথরের স্তূপ জমা হয়েছে। ‘সাদা পাথর’ নামের স্থানটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয়। এখানেই এসব পাথর সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, বর্ষকালে ধলাই নদের সেতু এলাকায় যত্রতত্র পাথর উত্তোলন করায় দফায় দফায় টাস্কফোর্সের অভিযান চালানো হয়। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনটি অভিযানে বালুর কারবারিদের ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অর্থদণ্ড করায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়। নদের পানি কমার পর এবার তীর এলাকায় জমা হওয়া বালু থেকে চিপ পাথর উত্তোলন শুরু করে বালুর কারবারিদেরই একটি চক্র। এ খবর পেয়ে ইউএনওর নেতৃত্বে আজ বেলা তিনটার দিকে আকস্মিক অভিযান চালানো হয়।
অভিযানসংশ্লিষ্টরা জানান, টানা দুই ঘণ্টার অভিযানে ধলাই নদের সেতু এলাকার দুই তীর থেকে ১৩টি ট্রাক্টর ও ৫টি নৌকা জব্দ করা হয়। এরপর পাথর তোলার কাজে ১ হাজার ফুট পাইপ ও ১৩টি শ্যালো মেশিন ধ্বংস করা হয়। পাথর উত্তোলনকাজে নিষিদ্ধ ‘বোমা মেশিন’-এর আদলে তৈরি শ্যালোযন্ত্রও নিষিদ্ধ। এই নিষিদ্ধ যন্ত্রের ব্যবহারকারীদের টাস্কফোর্সের অভিযানের সময় পাওয়া যায়নি। যন্ত্রের ব্যবহার থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা অভিযানকালে প্রচার করা হয়।
অভিযান শেষে সন্ধ্যায় ইউএনও সুমন আচার্য প্রথম আলোকে বলেন, বর্ষার পর শুষ্ককাল সামনে রেখে এ ধরনের তৎপরতা শুরু হয়েছে। এতে করে নদের তীর অরক্ষিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অবৈধ এই তৎপরতায় জড়িত চক্রকে ভেঙে ফেলতে মৌসুমের শুরুতেই অভিযান চালানো হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।