ধর্ষণ মামলায় পুলিশের এসআই কারাগারে

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ে এক নারীর করা ধর্ষণের মামলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মেহেদী হাসান তালুকদার এ আদেশ দেন। পুলিশের ওই কর্মকর্তার নাম আবদুল জলিল (৪৫)। তিনি কুড়িগ্রাম সদর থানায় কর্মরত ছিলেন।

এ মামলায় একই আদালত গত ২৩ জানুয়ারি জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। পরে তিনি উচ্চ আদালতে ছয় সপ্তাহের জামিন পান। ১৬ মার্চ উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আজ তিনি পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ২০২১ সালের ২৫ মার্চ জলিলের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন ওই নারী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে প্রথমে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল পঞ্চগড় পৌরসভার পূর্ব জালাসী এলাকার বিধবা এক নারী (৩৭) তাঁর ভাশুরের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেই জিডির তদন্তের দায়িত্ব পান পঞ্চগড় সদর থানার তৎকালীন এসআই আবদুল জলিল। তদন্ত করতে গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। এরপর ২০২০ সালের ১০ জুন ওই নারীকে জলিল ধর্ষণ করেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, ওই নারীর পরিবারের লোকজন ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পেরে জলিলকে আটক করেন। ওই দিনই দুই ব্যক্তিকে ডেকে এনে ওই নারীকে বিয়ে করেন জলিল। তবে সরকারি চাকরির কারণে বিষয়টি প্রকাশ্যে না আনতে অনুরোধ করেন তিনি। এরপর নানা সময়ে বিয়ের কাবিননামা দেখাতে বললে সময়ক্ষেপণ করতেন জলিল। পরে পঞ্চগড় জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান ওই নারী। এরপর জলিল বদলি হয়ে কুড়িগ্রামে চলে যান। এরপর দু–একবার দেখা হলেও ওই নারীকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে রাজি হননি জলিল। ভুয়া কাবিনে বিয়ে হয়েছে দাবি করে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন ওই নারীকে।

আজ মামলাটির জামিন শুনানির সময় পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আজিজার রহমান, বাদীপক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাসানসহ আসামীপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

শুনানি শেষে পিপি আজিজার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আসামি আবদুল জলিল উচ্চ আদালতের অন্তবর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি আদালতে এসে জামিন আবেদন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ থাকায় জামিন শুনানি শেষে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

এসআই জলিলের বর্তমান কর্মস্থল কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মো. শাহরিয়ার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এসআই আবদুল জলিল বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন।