ধরলা ও রত্নাই পারের অসহায় মানুষেরা পেল ঈদ উপহার
পায়ে হাঁটার শক্তি নেই বলে হুইলচেয়ারে বসে আবদুল কাইয়ুম (৬০) ও মো. মানিক মিয়া (৩২) লালমনিরহাট সদর উপজেলার বুমকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এসেছিলেন প্রথম আলো ট্রাস্টের ঈদ উপহারসামগ্রী গ্রহণ করতে। আজ শনিবার সকালে তাঁদের মতো অসহায়, দুস্থ ও কর্মহীন ১০০ পরিবারের সদস্যরা এসেছিলেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধরলা ও রত্নাই নদ–নদী পারের মোগল হাট ইউনিয়নের চার গ্রাম থেকে।
গ্রামগুলো হচ্ছে বুমকা, ইটাপোতা, কর্ণপুর ও কুড়ল। তাঁদের সবার মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের সহায়তায় ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন প্রথম আলো লালমনিরহাট বন্ধুসভার সদস্যরা।
ইটাপোতা গ্রামের আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষ। হুইলচেয়ারে চলি, কেউ কামে নেয় না। শক্তিও নাই। রোজার মাস, করোনার সমস্যা, সবার টানাটানির সংসার। এহন আর আগের মতন সাহায্য পাই না। প্রথম আলোর থাকি খাদ্যসামগ্রী পায়া খুব উপকার হইল। কয় দিন পরিবারের খাবারের চিন্তা দূর হইল।’
একই রকম কথা বলেন ইটাপোতা গ্রামের লোকমান আলীর প্রতিবন্ধী ছেলে মো. মানিক মিয়া।
মোগলহাট ইউনিয়নের মানজাটারি গ্রামের মৃত নসিমুদ্দিনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৬৫) বলেন, ‘অভাবের সংসারে খাওয়াদাওয়ার কষ্ট। রোজার মাসে তোমগোর দেওয়া খাদ্যবস্তু পায়া খুব উপকার পাইলাম। আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করি যেন তোমগোর ভালো হয়।’
ঈদ উপহারসামগ্রী হিসেবে প্রতিটি পরিবারকে পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি দেশি মসুর ডাল, এক কেজি প্যাকেটজাত লবণ ও এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর, লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান, প্রথম আলোর লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি আবদুর রব সুজন, প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. আসাদুজ্জামান, যোগাযোগ সম্পাদক আবুল হোসেন, বন্ধুসভার বন্ধু জহর আলী, সাহাদাত হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মো. আলী প্রমুখ।
প্রথম আলো দেশের মানুষের কাছে প্রিয় পত্রিকা। সেই পত্রিকার ট্রাস্টের সহায়তায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজ শুধু প্রশংসার যোগ্য একটি ভালো কাজই নয়, বরং সেটা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, ‘প্রথম আলো দেশের মানুষের কাছে প্রিয় পত্রিকা। সেই পত্রিকার ট্রাস্টের সহায়তায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজ শুধু প্রশংসার যোগ্য একটি ভালো কাজই নয়, বরং সেটা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।’ তিনি বলেন, সরকার সব সময় অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থ–সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যায়। বিভিন্ন ধরনের সেফটি নেট রয়েছে। তবে সরকারের এসব উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, সংস্থা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগ অসহায় ও দুস্থ কর্মহীন মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা সব সময় ভালো উদাহরণ।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগল হাট ইউপির চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথম আলো পরিবারের কাছে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।’