ধরমপাশায় দুই কিশোরীর পরিবারকে বুঝিয়ে বন্ধ হলো বাল্যবিবাহ
সুনামগঞ্জের ধরমপাশায় আজ রোববার একই দিনে দুটি বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ আয়োজনের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের বুঝিয়ে বিয়ে দুটি বন্ধ করা হয়। মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগপর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন অভিভাবকেরা।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের একটি গ্রামে আজ রোববার সন্ধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর (১২) সঙ্গে একই গ্রামের এক তরুণের (২২) বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছ থেকে এই বাল্যবিবাহ আয়োজনের খবরটি পান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান।
তিনি রোববার সকাল ১০টার দিকে মুঠোফোনে মো. মবিন উদ্দিন (৩৫) নামের এক শিক্ষককে বাল্যবিবাহটি বন্ধ করতে মুঠোফোনে কথা বলেন। ওই শিক্ষক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বর ও কনের বাড়িতে যান। এ সময় তিনি অভিভাবকদের ১৮ বছরের আগে কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার কুফল ও রাষ্ট্রীয় আইনে এ ধরনের বিয়ের স্বীকৃতি নেই, এমনটি বুঝিয়ে বলেন। ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটিকে কোথাও বিয়ে দেওয়া হবে না বলে দুই পক্ষের লোকজন এ বিষয়ে মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেন।
অন্যদিকে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক কিশোরীর (১৩) সঙ্গে পাশে মোহনগঞ্জ উপজেলার এক তরুণের (২৫) আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ধরমপাশা থানার ওসি খালেদ চৌধুরীকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন ইউএনও। ওসির নির্দেশে বেলা সোয়া একটার দিকে কনের বাড়িতে যান ধরমপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র দাস।
কনের বাড়িতে পুলিশ রয়েছে, এমন খবর পেয়ে বর ও বরযাত্রী কনের বাড়িতে যাননি। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বাল্যবিবাহের কুফল এবং এ নিয়ে আইনে কী বলা আছে, তা মেয়েপক্ষের অভিভাবকদের বুঝিয়ে বলেন। এরপর তাঁরা এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সম্মত হন।
ইউএনও মুনতাসির হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। রাষ্ট্রীয় আইনে এ ধরনের বিয়ের কোনো স্বীকৃতি নেই। স্থানীয় সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দুটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। বাল্যবিবাহ বন্ধে উপজেলা প্রশাসন সব সময় তৎপর।