দোকানের তালা বদলাতে গিয়ে লাশ হন সালাম
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বৈটিকর এলাকায় নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৬০) সাইকেল ও রিকশা মেরামতের দোকান চালাতেন। প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে বৈটিকর বাজারে তিনি সাইকেল ও রিকশা মেরামতের কাজ করতেন। সাইকেল ও রিকশা মেরামতের জন্য তাঁর একটি দোকান ছিল। ওই দোকানের সামনে বসেই তিনি মেরামতকাজ করতেন।
গতকাল রোববার বিকেলে গোলাপগঞ্জের লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নে ভোট দেওয়া শেষে বৈটিকর বাজারে নিজ দোকানের তালা বদল করতে যান। পরে রাত আটটার দিকে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে সংঘর্ষ বাধলে গুলিবিব্ধ হন সালাম। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সালামের বড় ছেলে আবুল কালাম (২৬) বলেন, তাঁর বাবা গতকাল বিকেল চারটার দিকে তিনি নিজ ইউনিয়নে ভোট দেওয়া শেষে বৈটিকরের দোকানের তালা বদল করতে যান। সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, দোকানের তালাটি মজবুত নয়। পরে রাত আটটার দিকে চাচা আলাউদ্দিন আহমদের মাধ্যমে বাবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পান। খবর পাওয়ার পরপরই চাচাকে সঙ্গে নিয়ে বৈটিকর বাজারে গিয়ে একটি মুদিদোকান থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে রাত সাড়ে ১০টায় নিয়ে আসার পরপরই চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবুল কালাম আরও বলেন, ‘বাবা কার গুলিতে নিহত হয়েছেন, সেটি বলতে পারছি না। গতকাল রাতে যখন তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছিল, তখন কথা বলার মতো পরিস্থিতি ছিল না। ওই মুদিদোকানদার শাটার খুলে ভেতর থেকে বাবাকে আমাদের কাছে তুলে দেন। মুদিদোকানটি বাবার দোকানের পাশাপাশি ছিল। সে সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ছিল। পুলিশ বারবারই ঘটনাস্থলে যেতে আমাদের বাধা দিচ্ছিল, এরপরও বাবা গুলিবিদ্ধ হওয়ায় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে গিয়েছিলাম।’
নিহত সালামের ভাই আলাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দোকানে তালা বদলাতে গেলেও সম্ভবত রিকশা ও বাইসাইকেল মেরামতকাজ শুরু করেছিলেন তিনি। রাতে সংঘর্ষ বাধলে পরে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গ্রামের এক বাসিন্দার মাধ্যমে আমি ভাইয়ের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাই।’