দুর্বৃত্তদের ছোড়া দাহ্য পদার্থে শিশুসহ এক পরিবারের তিনজন দগ্ধ
বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া দাহ্য পদার্থে তিন মাসের এক শিশুসহ একই পরিবারের ঘুমন্ত তিন সদস্য দগ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের তেলিহাটা কর্মকার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্যের দাবি, ওই দাহ্য পদার্থ ছিল অ্যাসিড।
দগ্ধ তিনজন হলেন তেলিহাটা কর্মকার পাড়ার দুলাল কর্মকারের স্ত্রী দীপালি রানী কর্মকার (৪৫), তাঁর পুত্রবধূ বীণা রানী কর্মকার (২৪) ও বীণা রানী কর্মকারের তিন মাসের শিশুসন্তান সূর্য কর্মকার। তাঁদের উদ্ধারের পর প্রথমে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার দুপুরে তাঁদের ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, শিশুটির গোটা মুখ ও কণ্ঠনালি ঝলসে গেছে। সব মিলিয়ে শরীরের প্রায় ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা বেশি গুরুতর। বাকিদের বুক, পিটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। তাঁদের অবস্থা তেমন সংকটাপন্ন নয়।
পরিবারের তিনজনই অ্যাসিডে দগ্ধ হয়েছেন বলে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের বরাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন বীণা রানীর স্বামী সাগর কর্মকার। তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁদের তিনজনকে শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে ঢাকায় বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাগর কর্মকার আরও বলেন, প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে শিশুপুত্রকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী ও মা একই বিছানায় জানালার পাশে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আড়াইটার দিকে ঘরের জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তদের ছোড়া অ্যাসিডে তিনজনের শরীর ঝলসে যায়। কারও সঙ্গে তাঁদের কোনো শত্রুতা নেই। কারা, কেন এভাবে অ্যাসিড নিক্ষেপ করল, বুঝতে পারছেন না সাগর।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, একই পরিবারের ঘুমন্ত তিন সদস্যের শরীরে দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে তাঁদের বুক, পিঠ ও মুখ ঝলসে গেছে। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে সহিংসতার শিকার পরিবারের সদস্যরা ভয়ে কোনো তথ্য দিচ্ছেন না। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।