দুই শিশুসন্তানসহ বিষপান, মায়ের মৃত্যু
দুই সন্তানসহ বিষ পান করেছেন শরীয়তপুরের এক গৃহবধূ। বিষপানে সুমাইয়া আক্তার (২০) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। বিষক্রিয়ায় তাঁর দুই সন্তান সাড়ে তিন বছরের মেয়ে হালিমা ও দুই বছরের ছেলে আবু হুরায়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
তাঁদের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে। গতকাল রোববার দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেশী ফাহিমা বেগম বলেন, ‘সুমাইয়ার শিশুসন্তানের চিৎকার শুনে ছুটে যাই। তখন জানতে পারি, তারা তিনজন বিষ পান করেছে। দ্রুত তাদের হাসপাতালে আনা হয়।’
গোসাইরহাট থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গোসাইরহাট উপজেলা সদরের পট্টি এলাকার সোহাগ খানের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয় ২০১৭ সালে। তাঁর স্বামী সাইফুল ইসলাম একই উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা। দুই শিশুসন্তান নিয়ে তাঁরা উপজেলা সদরের পট্টিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সাইফুল ভ্যান-রিকশা চালাতেন। তাঁদের দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। গত শনিবার রাতে ও গতকাল সকালেও তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে সুমাইয়া দুই শিশুসন্তানকে বিষ পান করান। এরপর নিজে বিষ পান করেন। প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তাঁদের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে আনা হয়। বেলা দুইটার দিকে সেখানে সুমাইয়ার মৃত্যু হয়। আর সংকটাপন্ন অবস্থায় দুই শিশুকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
সুমাইয়ার স্বামী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সামান্য ঝগড়ার পর এভাবে সে চলে যাবে বুঝতে পারিনি। জানি না, আল্লাহ আমার শিশুসন্তান দুটির কপালে কী পরিণতি রাখছে।’
সুমাইয়ার মা রাহিমা বেগম বলেন, ‘সংসারের অভাব–অনটন নিয়ে তাঁদের ঝগড়া লেগেই থাকত। শনিবার সাইফুল তাঁর মেয়েকে মারধর করেছিল। সেই অভিমানেই হয়তো মেয়েটা এ পথ বেছে নিয়েছে।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম বলেন, বিষাক্ত কিছু পান করার কারণে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আর এ কারণে শিশু দুটির অবস্থাও সংকটাপন্ন। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া প্রয়োজন।