দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল। গতকাল শনিবার সকালে উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে ৫০৪তম সিন্ডিকেট সভায় সেলের প্রতিবেদনটি উত্থাপন করা হয়। সভায় ওই শিক্ষককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রতিবেদনটি সিন্ডিকেটে উত্থাপন ও শোকজের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রতিবেদনে বিষ্ণু কুমার অধিকারীকে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছয় বছরের জন্য অব্যাহতি দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক হাবীবুর রহমান বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় বিষ্ণু কুমার অধিকারীকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে কয়েক দফা সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সব ক্লাস-পরীক্ষা থেকে ছয় বছরের জন্য অব্যাহতি, ছয় বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি ও ইনক্রিমেন্ট স্থগিত রাখা। এ ছাড়া তিনি ১০ বছরের জন্য পদোন্নতির আবেদন করতে পারবেন না। এই সুপারিশগুলো পরবর্তী সিন্ডিকেটে শাস্তির অনুমোদন হতে পারে।’
২০১৯ সালের ২৫ ও ২৭ জুন ইনস্টিটিউটের চতুর্থ ও দ্বিতীয় বর্ষের দুজন ছাত্রী শিক্ষক বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেন। প্রথম অভিযোগের পরই ২৫ জুন সন্ধ্যায় ইনস্টিটিউটের তৎকালীন পরিচালক আবুল হাসান চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই বছরের ২১ জুলাই ইনস্টিটিউটের তদন্ত কমিটি যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়।
সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সব ক্লাস-পরীক্ষা থেকে ছয় বছরের জন্য অব্যাহতি, ছয় বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি ও ইনক্রিমেন্ট স্থগিত রাখা। এ ছাড়া তিনি ১০ বছরের জন্য পদোন্নতির আবেদন করতে পারবেন না।অধ্যাপক হাবীবুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্য
প্রতিবেদনটি তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন। এরপর উপাচার্য বিষয়টি তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলকে দায়িত্ব দেন। সম্প্রতি সেলটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারীর দ্বারা দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবেদনটি আজ (শনিবার) সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপিত হয়েছিল। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে ওই শিক্ষককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর তাঁর বক্তব্য ও তদন্ত কমিটির ফাইন্ডিংসগুলো পর্যালোচনা করে ওই শিক্ষকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’