কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মো. সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহা হত্যা মামলার দুই আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়েছে। রোববার বিকেলে ওই দুই আসামিকে আদালতে নিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
ওই দুই আসামি হলেন নগরের নবগ্রাম এলাকার শাহ আলমের ছেলে সোহেল ওরফে জেল সোহেল (২৮) এবং একই এলাকার প্রয়াত সামছুল হকের ছেলে সায়মন (৩০)। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত দুই আসামির জবানবন্দি নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির উপপরিদর্শক মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রিমান্ডে হত্যা মামলার আসামিরা অস্ত্রপ্রাপ্তির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। পুলিশ এসব তথ্য বিশ্লেষণ করছে। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ নভেম্বর বিকেলে কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রিস্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর মো. সোহেল ও হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পরদিন ২৩ নভেম্বর রাতে নিহত সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এ পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত ১১ আসামির মধ্যে ৩ জন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন এবং সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া এজাহারনামীয় সাত আসামির মধ্যে ছয়জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর মধ্যে মামলার ২ নম্বর আসামি সোহেল ওরফে জেল সোহেল ও ১০ নম্বর আসামি সায়মনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া জানান, মামলার অপর চার আসামি আশিকুর রহমান ওরফে রকি, আলম, জিসান মিয়া ও মাসুম কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। আগামীকাল সোমবার তাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হবে। হত্যার সঙ্গে জড়িত নাজিম ও নিশাতকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
নাজিমের বাড়ি কুমিল্লা নগরের শুভপুরসংলগ্ন গাংচর এলাকায়। তিনি এলাকায় ‘পিচ্চি নাজিম’ নামে পরিচিত। এদিকে নিশাতের বাড়ি ফেনী। হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও নাজিম ও নিশাত এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশের সরবরাহ করা সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে নাজিমকে শনাক্ত করা হয়েছে। ওই ভিডিওতে হত্যাকাণ্ডের দিন বিকেল সাড়ে চারটায় থ্রিস্টার এন্টারপ্রাইজের ভেতরে মামলার প্রধান আসামি শাহ আলমের পেছনে পিস্তল হাতে নাজিমকে দেখা গেছে। এদিকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র নিশাত সরবরাহ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।