দিরাই-শাল্লা সড়ক নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
সুনামগঞ্জে দিরাই উপজেলা থেকে শাল্লা উপজেলা পর্যন্ত সরাসরি যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মাণের দাবিতে আজ মঙ্গলবার মানববন্ধন হয়েছে। শাল্লা উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে দুপুরে শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সামনের সড়কে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলেন, হাওর–অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের শাল্লা যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক অনুন্নত। সুনামগঞ্জ থেকে দিরাই উপজেলা পর্যন্ত সরাসরি সড়ক যোগাযোগ থাকলেও দিরাই থেকে শাল্লার সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়নি। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের চেষ্টায় ২০১১ সালে দিরাই-শাল্লা ১৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এই প্রকল্পের কিছু কাজ হলেও পরে সেই কাজ টেকেনি। অনেক সেতু ও কালভার্টের সংযোগ সড়ক নেই। কোথাও কোথাও হাওরের ঢেউয়ে সড়কের মাটি ভেসে গেছে। ফলে সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়নি।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, বর্ষায় নৌকা আর হেমন্তে দিরাই উপজেলা থেকে হেটে বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে শাল্লায় যাতায়াত করতে হয় লোকজনকে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। এলাকার বর্তমান সাংসদ জয়া সেনগুপ্ত এই সড়ক নির্মাণের বিষয়ে একাধিকবার জাতীয় সংসদে কথা বলেছেন। সম্প্রতি এই সড়ক নির্মাণের জন্য আরেকটি প্রকল্প নিলেও সেটি এখনো অনুমোদন হয়নি। এই প্রকল্প দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দ্রুত দিরাই-শাল্লা সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন এলাকার প্রবীণ সমাজকর্মী রবীন্দ্র কুমার দাস, শাল্লা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দুলদুল চৌধুরী, সমাজকর্মী বুকুল আহমেদ তালুকদার, শিক্ষক সুব্রত কুমার দাস, স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মান্নান, বাদল চন্দ্র দাস, ফনি ভূষণ সরকার, অজয় তালুকদার, সাইফুর রহমান, তারেক হাসান প্রমুখ।
দিরাই-শাল্লা সড়ক নির্মাণের একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আছে। মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাই কমিটি প্রকল্পের জন্য ৫৫১ কোটি টাকা প্রাক্কলন নির্ধারণ করে।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেছেন, দিরাই-শাল্লা সড়ক নির্মাণের একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আছে। মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ যাচাই-বাছাই কমিটি প্রকল্পের জন্য ৫৫১ কোটি টাকা প্রাক্কলন নির্ধারণ করে। পরে নকশা শাখা থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রকল্প ব্যয় ৮৫৭ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম আরও বলেন, প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৭ মে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল এই প্রকল্প এলাকা পরির্দশন করে গেছে। তাদের প্রতিবেদন দেওয়ার পরই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।