ভবনের বারান্দায় আম, জাম, পেয়ারা, সফেদা, বেদানা, আমড়াসহ হরেক গাছের তিন শতাধিক চারা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই হাতে একটি করে গাছ নিয়ে উঠে গেলেন ভবনের ছাদে। ছাদে আগেই প্রস্তুত মাটিভর্তি নীল রঙের অনেকগুলো ড্রাম। সবাই মিলে চারাগুলো রোপণ করলেন এসব ড্রামে। শেওলায় কালচে হয়ে যাওয়া ছাদের বুকে মুহূর্তেই চোখ মেলল টুকরো টুকরো সবুজ।
বুধবার বিকেলে দিনাজপুর কালেক্টরেট ভবনের ছাদে বাস্তবায়িত হয় এই সবুজায়ন কর্মসূচি। ছাদবাগানের এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম। উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. তৌহিদ ইকবাল, হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহফুজুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সানিউল ফেরদৌস প্রমুখ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা কালেক্টরেট ভবনের ছাদের আয়তন ২০ হাজার বর্গফুট। বছরখানেক আগে সেখানে জাম, সফেদা ও পেয়ারার কয়েকটি গাছ লাগানো হয়েছিল। চলতি মৌসুমে গাছগুলোতে ফলও ধরে। পরবর্তী সময়ে ভবনের ছাদে চার শতাধিক বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনা নেয় জেলা প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে বুধবার আম, জাম, সফেদা, আমড়া, লেবু, পেয়ারা, মাল্টাসহ বিভিন্ন গাছের তিন শতাধিক চারা লাগানো হয়। এরপর লাগানো হবে বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ। এ জন্য ছাদে শতাধিক টব প্রস্তুত করা হয়েছে।
এমন বাগানের বড় সুবিধা হচ্ছে, ছাদ সব সময় ঠান্ডা থাকবে। একদিকে পরিবেশ রক্ষা হবে, অন্যদিকে উৎপাদিত দেশীয় ফল পুষ্টির জোগান বাড়াবে।মাহমুদুল আলম, জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণের ওপর যে গুরুত্ব দিয়েছেন, এর অংশ হিসেবে সমতল ভূমির পাশাপাশি দিনাজপুরে প্রতিটি সরকারি-আধা সরকারি ভবনের ছাদে বাগান গড়ে তোলার কর্মসূচি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমন বাগানের বড় সুবিধা হচ্ছে, ছাদ সব সময় ঠান্ডা থাকবে। একদিকে পরিবেশ রক্ষা হবে, অন্যদিকে উৎপাদিত দেশীয় ফল পুষ্টির জোগান বাড়াবে। কালেক্টরেট ভবনের এ ছাদবাগান দেখভালের জন্য একজন সার্বক্ষণিক কর্মচারী নিয়োগের কথা জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তৌহিদ ইকবাল বলেন, দিনাজপুরে সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাদবাগান। বর্তমানে জেলায় শতাধিক বাড়ির ছাদে এমন বাগান রয়েছে। বিশেষ করে জেলা শহরের বালুয়াডাঙ্গা, বালুবাড়ি, সুইহারি, গোলাপবাগ, গুড়গোলা, ঈদগাহবস্তি এলাকায় ছাদবাগানের সংখ্যা বেশি। ছাদবাগানে আগ্রহী ৩৫ জনকে নিয়ে সম্প্রতি একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে টবে পানি জমিয়ে না রাখা ও নিয়মিত গাছের পরিচর্যার বিষয়ে আলোচনা হয়।