দাউদকান্দিতে চলন্ত বাসে আগুনে নিহত ২, আহত ২২
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে চলন্ত বাসে আগুন লেগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন ২২ জন। মতলব এক্সপ্রেসের বাসটি ঢাকা থেকে মতলব যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের হাবিলদার আশরাফুল আলম তিনজনের মৃত্যুর তথ্য দিলেও পরে তিনি দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন দাউদকান্দির তিনপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৭০) এবং বনুয়াকান্দি গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সাফিন (৪)। দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন।
তাঁদের বাইরে আহত দুজনকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাসের আগুন দেখতে গিয়ে নিজেদের বাসার ছাদ থেকে পড়ে একজন গৃহবধূ ও একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মতলব এক্সপ্রেসের বাসটি গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করার সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফলে আগুন আশপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।
বাসের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় আহত রিয়াদ হোসেন বলেন, দাউদকান্দির একটি ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস ভরে পাঁচ–ছয় কিলোমিটার চালিয়ে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে আসে বাসটি। হঠাৎ বাসের পেছন দিকে (সিলিন্ডার যেখানে থাকে) বিকট শব্দ হয়ে বাসের মধ্যে আগুন লেগে যায়। এ সময় তিনি জানালা ভেঙে লাফিয়ে নিচে পড়েন। এতে তাঁর হাত কেটে যায়।
গুরুতর দগ্ধ মো. মামুন ( ৩২), গোলাম হোসেন (৪৫), হালিমা খাতুন (৪০), ফারুক মিয়া (৪৫), মনির উদ্দিন (৩৫), বিশ্বনাথ দেবনাথ (৫০), বিল্লাল সরকার (৪০), সামছুন নাহার (২৫), জেরিন আক্তার (২২), সৈয়দ আহমেদ মীর (৩২), মহসীন মিয়া (৩৮), তাহিয়া (১১), তাসনিয়া (১৭), আবদুর রহিম (৫৬) ও হালিমা আক্তারকে (৫৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পুটিয়া পর্যন্ত সাত কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট হয়। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এদের একজন কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী আনিকা সুলতানা বলেন, ‘রাতের বেলায় যানজটে আটকে থেকে গাড়ি থেকে নেমে নিরাপত্তার অভাবে হাঁটতেও পারছি না।’
দুর্ঘটনার পর কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ এবং দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।