নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার সাড়ে ১১ বছর পর তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। আজ মঙ্গলবার ও গতকাল সোমবার নারায়ণগঞ্জের পৃথক দুটি আদালত তিন আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
তিন আসামি হলেন নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকার শাফায়েত হোসেন ওরফে শাওন, শহরের কালীবাজার এলাকার মামুন মিয়া ও রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার কাজল হাওলাদার। আলোচিত এই হত্যা মামলায় এর আগে গ্রেপ্তার আসামিদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এই তিনজনের নাম আসে বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে। জেলায় চালঞ্চ্যকর ও রোমহর্ষ মামলা নিষ্পত্তি–সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির ২৫টি মামলার মধ্যে ত্বকী হত্যা মামলা ১১ নম্বরে রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলীর আদালতে আসামি কাজল হাওলাদারকে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১১–এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। আদালত শুনানি শেষে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার মামুন মিয়া ও শাফায়েত হোসেনকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবদুর রশিদ আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে রিমান্ডের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এর আগে ত্বকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসা তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। তাঁদের তিনজনকে পৃথক দুটি আদালতে সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানালে শুনানি শেষে আদালত ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে র্যাব-১১–এর মিডিয়া অফিসার সনদ বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ত্বকী হত্যা মামলা পুলিশ তদন্ত করলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব র্যাব-১১–কে দেওয়া হয়। ত্বকী হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে শাফায়েত হোসেন এবং রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে কাজল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। গতকাল সোমবার শহরের কালীরবাজার এলাকা থেকে মামুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে আসামিরা র্যাব হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।