‘তুই কি সিয়ামের বন্ধু’ বলেই স্কুলছাত্রকে জখম করল কিশোর গ্যাং
নারায়ণগঞ্জে এক স্কুলছাত্রকে পথরোধ করে কুপিয়ে জখম করেছে একদল কিশোর। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের মাসদাইর ঈদগাহ মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত আহমেদ অনন্ত শাহ নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। গুরুতর অবস্থায় আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি করে। তার পিঠে ১৮টি সেলাই লেগেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আহমেদ অনন্ত শাহ নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, সময়ের আলো ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি শরীফ উদ্দিনের সন্তান। শরীফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে অনন্তর এক স্কুলশিক্ষক ব্রেইনস্ট্রোক করেন। সে জন্য অনন্ত ও তার দুই বন্ধু ওই শিক্ষকের বাড়িতে যায়। শিক্ষককে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে মাসদাইর কবরস্থান জিয়ারত করে তারা বাড়ি ফিরছিল। এ সময় মাসদাইর ঈদগাহ মাঠ এলাকায় মেলা ফুডের সামনে আদর্শ স্কুলের ছাত্র জিহানের (১৫) নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনের একদল কিশোর তাদের পথরোধ করে।
শরীফ উদ্দিন আরও বলেন, পথ আটকিয়ে তারা অনন্তের কাছে জানতে চায়, ‘তুই কি সিয়ামের বন্ধু?’ ‘হ্যাঁ’ বলার সঙ্গে সঙ্গে অনন্তকে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। তাকে (অনন্ত) টেনে মাসদাইর ঈদগাহ মাঠের ভেতর অন্ধকার জায়গার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ধস্তাধস্তি হলে অনন্তর পিঠে ছুরিকাঘাত করে তারা। আশপাশের লোকজন অনন্তকে উদ্ধার করে চাষাঢ়া কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তার পিঠে ১৮টি সেলাই দেন। ছুরিকাঘাতের কারণে অনন্তের শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
শরীফ উদ্দিন আরও বলেন, ‘কী কারণে এই হামলা হয়েছে, তা আমি এখনো জানি না। আমি পুলিশ ও র্যাবকে জানিয়েছি, রাজনৈতিক বা অন্য কোনো বিরোধ এবং আমার পেশাগত কারণে সংক্ষুব্ধ কোনো পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তা তাদের খতিয়ে দেখতে বলেছি। তারা তদন্ত করে বের করুক কারা, কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর পেছনে অন্য কোনো শক্তি বা নেপথ্যে কারণ রয়েছে কি না।’
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে জিহানসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে।