তালায় সরকারি বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগ

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় একটি সরকারি বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণকাজ পেশিশক্তি খাটিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আবদুস সোবহান বিশ্বাস ও তাঁর ছেলে শহীদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ওই বাবা-ছেলে মিলে ওই বিদ্যালয়ের জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন বলে জানা গেছে।

তালার বিদ্যালয়টি হলো ভাগবাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাগবাহ গ্রামে তালা-পাটকেলঘাটা সড়কের পাশেই বিদ্যালয়টির অবস্থান। আবদুস সোবহান বিশ্বাস ও তাঁর ছেলে শহীদ বিশ্বাসের বাড়ি পাশের কুমিরা গ্রামে। গত সোমবার (২৬ অক্টোবর) বিদ্যালয়টির জমি দখলে নিয়ে বাবা-ছেলে দোকানঘর নির্মাণ শুরু করেন। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভাগবাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধান শিক্ষক এস এম জাকিউর রহমান সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হয় ভাগবাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ করা হয়। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে স্কুলের একটি ভবনও নির্মিত হয়। বাড়িঘরের পাশে বিদ্যালয় অবস্থিত হওয়ায় দুর্ঘটনা থেকে শিশুদের রক্ষা ও বিদ্যালয়ের ভেতরের পরিবেশ সুন্দর করার জন্য সরকার চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাচীর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়। প্রাচীর নির্মাণের কাজও শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎ করে স্কুলের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে প্রাচীরের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন আবদুস সোবহান বিশ্বাস ও তাঁর ছেলে শহীদ বিশ্বাস। এ সময় তাঁরা স্কুলের জমি দখলে নিয়ে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করেন। বাধা দিতে গেলে তাঁরা হুমকিধমকি দেন।

এদিকে আবদুস সোবহান বিশ্বাস দাবি করেন, তাঁরা বিদ্যালয়ের জমি দখল করেননি। বিদ্যালয়ের মধ্যে তাঁদের নিজস্ব জমি রয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই জমিতে প্রাচীর দিতে গেলে তাঁরা বাধা দিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের জমিতেই দোকান নির্মাণ করছেন বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে তালা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) শেখ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্গাপূজার দশমীর দিনে স্কুলের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করেন কয়েকজন। বিষয়টি তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের জমি রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘ভাগবাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণে বাধা ও বিদ্যালয়ের জমি দখলচেষ্টার অভিযোগ অবগত হয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি আমরা। ইতিমধ্যে ইউএনওর নির্দেশে একজন তহশিলদার বিদ্যালয়ের জমি পরিমাপ ও তদন্ত করে গেছেন। তবে এখনো কোনো প্রতিবেদন দেননি তিনি। এদিকে বিদ্যালয়ের জমিতে কুমিরা গ্রামের আবদুস সোবহান বিশ্বাস ও তাঁর ছেলে শহীদ বিশ্বাস স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রেখেছেন।’