উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এতে জেলার আউশ, বোনা আমন, সবজি ও পাট চাষের ৯২ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জেলায় বন্যার পানিতে এই চার ধরনের ফসলের কৃষকদের প্রায় ১১৯ কোটি ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিশ্চিত করেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলার ফসলি জমি প্লাবিতসহ তলিয়ে গেছে। এতে জেলার ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর আউশ ধান, ৯ হাজার ৩৬ হেক্টর বোনা আমন ধান, ৪৯৫ হেক্টর সবজি ও ৩৪ হেক্টর পাট চাষের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে আউশ ধানের ৩৫ হাজার ৬২৫ কৃষক, বোনা আমন ধানের ৪৭ হাজার ৮২ কৃষক, সবজির ৯ হাজার ৯ জন কৃষক ও পাট চাষের ৩৪৪ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পানিতে ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় এ বছর জেলায় আউশ ধানের ৫৬ কোটি, বোনা আমন ধানে ৪৬ কোটি, সবজিতে ১৭ কোটি ও পাট চাষে ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। জেলায় আউশ, বোনা আমন ধান, সবজি ও পাট চাষের ১৪ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমি তলিয়ে ৯২ হাজার ৬০ কৃষকের ১১৯ কোটি ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া, নাসিরনগর, বিজয়নগর, সদর ও সরাইল উপজেলার অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের আউশ ও আমন ধান, সবজি ও পাট চাষের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। নাসিরনগরে সবচেয়ে বেশি বোনা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে জেলার বিজয়নগর, আখাউড়া ও নাসিরনগর উপজেলায় ভেসে গেছে প্রায় ৮৪১টি পুকুরের মাছ। প্রায় ৬০০ মাছচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শুধু আখাউড়া ও নাসিরনগর উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তবে পানি এখন ধীরগতিতে নামতে শুরু করেছে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, উপজেলার ১০৫ হেক্টর জমিতে আউশ ও ২৮০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫৫ হেক্টর আউশ ও ৫০ হেক্টর সবজির খেত তলিয়ে গেছে।