ট্রাকচালককে মারধর করলেন সাংসদের লোকজন, ১৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
সাংসদের গাড়িকে সাইড না দেওয়ায় এক ট্রাকচালককে মারধর ও আটকের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তেজিত শ্রমিকদের ডাকে টানা ১৬ ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ পালিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত নয়টা থেকে আজ শনিবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ ও শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে এই অবরোধ পালিত হয়। এ সময় চরম দুর্ভোগ ভোগ পোহাতে হয় সড়ক দুটিতে চলাচলকারী পরিবহনযাত্রীদের।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহনশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সাংসদ বীর প্রতীক ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল একটি দলীয় সভায় যোগ দিতে শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়ক দিয়ে ধলামূলগাও এলাকায় যাচ্ছিলেন। ওই সড়ক দিয়ে দিনে ও রাতে হাজার হাজার বালুবাহী ট্রাক দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর বালু আনা-নেওয়া করে। সে জন্য প্রায়ই যানজট লেগেই থাকে। সড়কটির জালশুকা রেলক্রসিং এলাকায় সাংসদের গাড়ি যখন পৌঁছায়, তখন একটি ট্রাক সাংসদের গাড়িকে পাশ কাটিয়ে (ওভারটেক) চলে যায়। এ সময় সাংসদের গাড়ির চালক ও সঙ্গে থাকা লোকদের সঙ্গে ট্রাকচালক দেলোয়ার মিয়া ও তাঁর সহকারী হালিম মিয়ার কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ট্রাকচালককে মারধর এবং ট্রাকসহ তাঁকে আটক করে শ্যামগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়।
গতকাল শুক্রবার রাত নয়টা থেকে আজ শনিবার বেলা দেড়টা পর্যন্ত নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ ও শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে এই অবরোধ পালিত হয়। এ সময় চরম দুর্ভোগ ভোগ পোহাতে হয় সড়ক দুটিতে চলাচলকারী পরিবহনযাত্রীদের।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রাত নয়টার পর থেকে উত্তেজিত শ্রমিকেরা নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ ও শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এ কারণে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে। আজ বেলা দেড়টা পর্যন্ত অবরোধ চলে। তবে রাতেই আটক চালক ও তাঁর সহকারীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আজ দুপুরে নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের প্রশাসন, পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে আলোচনার পর পরিবহনমালিক ও শ্রমিকনেতাদের বিষয়টি সমাধানের আশ্বাসে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।
এই সমস্যা মিটে গেছে।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সাংসদ ওয়রেসাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই সমস্যা মিটে গেছে।’ এ কথা বলেই ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।
মপির লোকজন আমাদের এক ট্রাকচালক ও হেলপারকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকেরা অবরোধ করেছিল। বিষয়টি এখন সমাধান হয়েছে।
ময়মনসিংহ পরিবহন শ্রমিকনেতা সোমনাথ সাহা বলেন, ‘এমপির লোকজন আমাদের এক ট্রাকচালক ও হেলপারকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকেরা অবরোধ করেছিল। বিষয়টি এখন সমাধান হয়েছে।’
শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফেরদৌস আহমেদ বলেন, জব্দ করা ট্রাকটি আজ দুপুরে শ্রমিকদের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘক্ষণ যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাক আটকে থাকায় অবরোধ উঠিয়ে নেওয়ার পরও নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ ও শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে সন্ধ্যা ছয়টার দিকেও যানজটে শত শত ট্রাককে আটকে থাকতে দেখা গেছে।