ট্রাকচাপায় সকালে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, বিকেলে স্বামীর মৃত্যু

মোটরসাইকেলে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন স্বামী। কথা ছিল স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে নামিয়ে কর্মক্ষেত্রে যাবেন তিনি। কিন্তু তা আর হলো না। পথে ট্রাকচাপায় স্ত্রীর পর মারা গেলেন স্বামীও।

সোমবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সামনের পাবনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মৃদুল সরকার (২৫) ও তাঁর স্ত্রী রিয়া খাতুন (১৮)। মৃদুল নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরি করতেন। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার লনদা গোপালপুর গ্রামে। অন্যদিকে রিয়ার বাবার বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের যুক্তিতলা এলাকায়।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৬ মাস আগে মৃদুল ও রিয়ার বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পর রিয়া অন্তঃসত্ত্বা হন। ফলে বিশ্রামের জন্য তাঁর কয়েক দিন বাবার বাড়িতে থাকার কথা ছিল। সে জন্য সকালে মৃদুল মোটরসাইকেলে করে স্ত্রী রিয়াকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রিয়াকে বাবার বাড়িতে নামিয়ে প্রকল্পের কাজে যাওয়ার কথা ছিল মৃদুলের।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল ৭টার দিকে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কুষ্টিয়ামুখী একটি দ্রুতগামী ট্রাক অন্য একটি ট্রাককে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে মোটরসাইকেলটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে। ঘটনাস্থলেই রিয়া মারা যান। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পাকশী হাইওয়ে পুলিশ মৃদুলকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে তিনিও মারা যান।

পাকশী হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকালেই নিহত রিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে ঘটনায় পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকেলে স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ট্রাকটি শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি।