টিলা কেটে রাস্তা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে টিলা কেটে রাস্তা প্রশস্তকরণের দায়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ তিন ব্যক্তিকে ১৩ লাখ ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ে শুনানি শেষে এ জরিমানা করা হয়।
স্থানীয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় জয়চণ্ডীর রঙ্গীরকুল থেকে পাঁচপীর জালাই এলাকা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা সংস্কারে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কাজের প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ। কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের। ওই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দুই পাশে ছোট-বড় টিলা রয়েছে। এসব স্থানে খননযন্ত্র দিয়ে টিলা কেটে রাস্তা প্রশস্ত করা হয়। কাজটি সম্পন্ন হওয়ার পথে।
কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের। ওই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দুই পাশে ছোট-বড় টিলা রয়েছে।
এদিকে টিলা কাটার খবর পেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা গতকাল সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে তিনি অধিদপ্তরের সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন পাঠান। পরে পরিচালক ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ, স্থানীয় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনু মিয়া ও খননযন্ত্রের মালিক স্থানীয় দিলদারপুর গ্রামের বাসিন্দা এলাইচ মিয়ার নামে নোটিশ পাঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ তিনজনের উপস্থিতিতে পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেনের কার্যালয়ে শুনানি হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সরেজমিন পরিদর্শনে অনুমোদন ছাড়া টিলা কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাস্তার দুই পাশে ছোট-বড় টিলার গড়ে আট ফুট উচ্চতায় কাটা পড়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে অনুমোদন ছাড়া টিলা কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাস্তার দুই পাশে ছোট-বড় টিলার গড়ে আট ফুট উচ্চতায় কাটা পড়েছে।
বদরুল হুদা বলেন, রাস্তাটি আগে ছোট ছিল। টিলা কেটে এটি প্রশস্ত করা হয়েছে। টিলা কাটায় ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। তাই তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ইউপি সদস্য মনু মিয়া এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এদিকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ ফোন ধরেননি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শিমুল আলী বলেন, রাস্তা চওড়া করতে গিয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দুই পাশে টিলা কিছু ছেঁটে ফেলেছেন। এ পরিস্থিতিতে পরিবেশ অধিদপ্তর ব্যবস্থা নিয়েছে।