টাঙ্গাইলে সন্ত্রাসী হামলায় আহত শ্রমিক লীগ নেতা রেজাউল মারা গেছেন

রেজাউল করিম
ছবি: সংগৃহীত

তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হেরে গেলেন রেজাউল করিম ওরফে রেজা (৩৮)। টাঙ্গাইলে জেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউলকে গত রোববার সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আহত রেজাউলকে ওই দিনই টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রোববার থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটায় চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

গত রোববার রাত ৯টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় রেজাউল করিম সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। হাত, পা, মেরুদণ্ডসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে রেজাউলের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ যৌথ উদ্যোগে টাঙ্গাইল শহীদ মিনারে সমাবেশ করা হয়। সেখানে বক্তারা এ হামলার জন্য সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর সহযোগীদের দায়ী করেন।

রেজাউলের বন্ধু ফারুক তালুকদার এনাম মেডিকেল কলেজ থেকে মুঠোফোনে জানান, রাতেই লাশ টাঙ্গাইলে আনা হবে। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তসহ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাঁকে দাফন করা হবে।

শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এ হামলার জন্য সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর সহযোগীদের দায়ী করেছে। ২০১৪ সালে ফারুক আহমেদ হত্যার বিচারের দাবিতে আমানুর ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়, সেখানে রেজাউল সক্রিয় ছিলেন।
আরও পড়ুন

রেজাউল করিম শহরের দেওলা এলাকার মো. আজাদ আলমগীরের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে। শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার আগে তিনি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। ২০১৪ সালে ফারুক আহমেদ হত্যার বিচারের দাবিতে আমানুর ও তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়, সেখানে রেজাউল সক্রিয় ছিলেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, হামলার পর রেজাউলের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখনো মামলা করা হয়নি।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা না হলেও তাঁরা রেজাউলের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পেরেছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আমিনুর রহমান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা ২০১৪ সালে টাঙ্গাইল থেকে বিতাড়িত হন। আমানুর জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকে আবার টাঙ্গাইলে অপতৎপরতা শুরু করেছেন। বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করছেন। তাঁদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবেই রেজাউলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।