ঝালকাঠিতে লাশ উদ্ধার, সুগন্ধার পাড়ে স্বজনদের ভিড়

লাশ
প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠির বিষখালী নদীতে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ভেসে উঠেছে। আজ সোমবার সকালে সদরের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চর সাচিলাপুর এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলটি রাজাপুরের সীমান্তবর্তী হওয়ায় লাশটি রাজাপুর থানা–পুলিশ উদ্ধার করেছে।

তবে ওই ব্যক্তির পরিচয় পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি। ওই ব্যক্তির পরনে কালো গেঞ্জি ও লুঙ্গি ছিল। তাঁর বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, উদ্ধার হওয়া লাশটি দুর্ঘটনাকবলিত অভিযান-১০ লঞ্চের যাত্রীর হতে পারে।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, আজ সকালে স্থানীয় লোকজন নদীতে লাশ ভেসে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির লাশ ফুলে গেছে। তাঁর পরনের লুঙ্গি হাঁটুর ওপর পর্যন্ত গুটিয়ে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, উদ্ধার হওয়া লাশ দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের যাত্রীর হতে পারে। লাশ উদ্ধারের বিষয়টি ঝালকাঠি থানাকে জানানো হয়েছে।

ডুবুরি দলের অভিযানে বিলম্ব

আজ সকালে চতুর্থ দিনের মতো সুগন্ধা নদীতে ডুবুরি দলের উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেই কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল অভিযান শুরু করেনি বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের অভিযান কার্যক্রম নিয়েও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, ডুবুরি দলের সদস্যরা বরিশাল থেকে সকাল নয়টায় ঝালকাঠি এসে আবার বিকেল পাঁচটায় বরিশাল ফিরে যান। ডুবুরি দলটি ঝালকাঠিতে অবস্থান করে অভিযান চালালে উদ্ধার অভিযান আরও কার্যকর হতো।

এ বিষয়ে ডুবুরি দলের প্রধান হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা বরিশাল থেকে আসার পথে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মুঠোফোন নম্বর দিয়ে এসেছি। তাঁরা কোনো লাশের সন্ধান পেলেই যেন আমাদের খবর দিতে পারেন। তবে রাতে নদীতে অভিযান চালানো সম্ভব নয়।’
এদিকে আজ সকাল থেকেই নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে তাঁদের স্বজনেরা ঝালকাঠির লঞ্চঘাট এলাকায় সুগন্ধার পাড়ে ভিড় করছেন। আবার বিষখালী নদীতে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হওয়ার খবরে অনেকেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন।

বরগুনার মনির হোসেনের বোন, ভাগনিসহ তাঁর পরিবারের চারজন নিখোঁজ। সকাল থেকেই তিনি সুগন্ধার পাড়ে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ক্লান্ত হয়ে গেছি। জানি না আমার পরিবারের লোকজনের ভাগ্যে কী ঘটেছে! তবে ডুবুরি দল ঝালকাঠিতে অবস্থান করে অভিযান চালালে দ্রুত সফলতা আসত।’

বরগুনা জেলা প্রশাসন থেকে ঝালকাঠিতে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী, লঞ্চ দুর্ঘটনায় এখনো ৪১ জন নিখোঁজ। তবে ঝালকাঠি রেড ক্রিসেন্টের তালিকা অনুযায়ী ৫১ জন নিখোঁজ।