জেলের জালে ধরা ১০ মণের শাপলাপাতা মাছ
সুন্দরবন–সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পেড়েছে বিশাল আকৃতির শাপলাপাতা মাছ। মাছটি বিক্রির জন্য আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মাজারের হাটে তোলা হয়। মাছটি দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা।
তিন দিন আগে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ফিশিং ট্রলারের জেলেরা শাপলাপাতা মাছটি ধরেন। আজ সকালে তাঁরা বাগেরহাটের সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কেবি বাজারে মাছটি বিক্রির জন্য নেন। কেবি বাজারের অনুপ কুমার বিশ্বাসের মৎস্য আড়তে উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে মাছটি বিক্রি হয়। অনুপ বলেন, এত বড় শাপলাপাতা মাছ সাধারণত দেখা যায় না। সাম্প্রতিক সময় তাঁর আড়তে এত বড় কোনো মাছ আসেনি। ১০ মণের মাছটি ৫২ হাজার ৫০০ টাকায় কিনে নেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মাহাতাব, জাকির ও জাফর সরদার।
এরপর দুপুরের দিকে মাছটি কেটে বিক্রির জন্য বাগেরহাটের হজরত খানজাহানের (রহ.) মাজার মোড়ের হাটে তোলেন বিক্রেতারা। মাইকিং করে সেখানে ৩৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করা হয়। সে হিসাবে মাছটি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
মাজারের সাপ্তাহিক এই হাটে বাজার করতে আসা শহরের খারদ্বার এলাকার নাজমুল হুদা বলেন, ‘হাটে ঢুকতেই মাইকে ঘোষণা শুনলাম ১০ মণ ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে। এসে দেখলাম, মস্ত বড় মাছ। শাপলাপাতা মাছ যে এত বড় হয়, তা জানা ছিল না।’
হাটে মাছটির বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, শাপলাপাতা মাছ সুস্বাদু। সাধারণত এক থেকে তিন মণ পর্যন্ত ওজনের মাছ পাওয়া যায়। সেগুলো খুচরা বাজারে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তবে এত বড় মাছ সাধারণত মেলে না।
ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) তথ্য অনুযায়ী, শাপলাপাতা মাছের ১৬টির মতো প্রজাতি আছে। বাংলাদেশে যে ৮ থেকে ১০ প্রজাতির শাপলাপাতা মাছ পাওয়া যায়, তার মধ্যে ২টি প্রজাতি মহাসংকটাপন্ন ও ৩টি সংকটাপন্ন। পিতাম্বরী বা নাঙলা ও ঘণ্টি শাপলাপাতা মাছকে মহাসংকটাপন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া পান্ন্যা, শিংচোয়াইন ও ঠোট্ট্যা ঘাপরি শাপলাপাতা মাছকে সংকটাপন্ন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া আছে চিত্রা হাউশ শাপলাপাতা, ছোটলেজি শাপলাপাতা, কালি শাপলাপাতা, ফুল শাপলাপাতা, বাদুড় শাপলাপাতা, বাদা শাপলাপাতা, থাইন ও চুনি প্রজাতি। এর কয়েকটি প্রজাতির বিক্রি নিষিদ্ধ।
বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনা কার্যালয়ের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শাপলাপাতা মাছের বেশ কয়েকটি প্রজাতি আছে। এই মাছ রক্ষা জরুরি। না দেখে বলা যাবে না এটি শাপলাপাতার কোনো নিষিদ্ধ প্রজাতি কি না।