জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠতে নিষেধ, প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করল ছাত্র
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বরিশালের উজিরপুরের এক বিদ্যালয়ের প্রভাতফেরি শেষে এক ছাত্র শহীদ মিনারের বেদিতে জুতা পরে উঠে যায়। ওই ছাত্রকে বেদি থেকে নেমে আসতে বলেন প্রধান শিক্ষক। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক ওই ছাত্রকে গালমন্দ করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরে ওই ছাত্র টেঁটা নিয়ে প্রধান শিক্ষককে ধাওয়া করে অবরুদ্ধ করে রাখে। স্থানীয় লোকজন এসে ওই শিক্ষককে উদ্ধার করেন।
গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার শোলক ভিক্টোরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ওই ছাত্রের নাম সিয়াম সরদার (১৬)। সে ওই বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সকালে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রভাতফেরি শেষে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার জন্য জড়ো হন। এ সময় দশম শ্রেণির ছাত্র সিয়াম সরদার জুতা পরে শহীদ মিনারে উঠে গেলে প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হোসেন সরদার তাতে বাধা দেন। নিষেধ অমান্য করায় একপর্যায়ে সিয়ামকে গালমন্দ করেন মোজাম্মেল হোসেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের বাইরে টেঁটা নিয়ে অপেক্ষা করছিল সিয়াম।
মোজাম্মেল হোসেন অভিযোগ করেন, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি বাড়িতে যাওয়ার জন্য বিদ্যালয় থেকে বের হন। এ সময় সিয়াম তাঁর ওপর হামলা করার জন্য টেঁটা নিয়ে ধাওয়া করে। তিনি আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে এসে বিদ্যালয়ের নিজ কক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় ওই ছাত্র কক্ষের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকলে মোজাম্মেল হোসেন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয়দের খবর দিলে তাঁরা বিদ্যালয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. জালাল মোল্লা ও মো. হারুন খান এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাঁরা বলেন, একজন ছাত্রের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আগামীকাল বুধবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সিয়াম হোসেন কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে সিয়ামের বাবা মো. জালাল সরদার বলেন, ‘ছেলের আচরণে আমি লজ্জিত। স্যারদের (শিক্ষকদের) যেকোনো সিদ্ধান্ত আমি মেনে নেব।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই কমিটির জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলী আর্শেদ বলেন, এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।