২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘জাতির কল্যাণে নিরলস কাজ করে গেছেন সৈয়দ আবুল মকসুদ’

মানিকগঞ্জে শুক্রবার সৈয়দ আবুল মকসুদের স্মরণে শোকসভার আয়োজন করা হয়। দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে
প্রথম আলো

সৈয়দ আবুল মকসুদ লেখার মধ্যেই নিজেকে সীমিত রাখেননি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের কাছে ছুটে গেছেন।  তিনি নীতিমান ও আদর্শিক মানুষ ছিলেন। লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে তিনি জাতির কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। প্রাপ্তির কোনো প্রত্যাশা ছিল না তাঁর।

আজ শুক্রবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সৈয়দ আবুল মকসুদের স্মরণে শোকসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। মানিকগঞ্জের এই গুণী সন্তানকে নিয়ে স্মরণসভার আয়োজন করে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব।

স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার। সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় শোকসভায় বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলাম বিশ্বাস, জেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান বিশ্বাস, সাংবাদিক কাবুল উদ্দিন খান ও আবদুল মোমিন।

গোলাম ছারোয়ার বলেন, সৈয়দ আবুল মকসুদ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে মন্তব্য কলাম লিখতেন। জীবনী, প্রবন্ধ, গবেষণা, ভ্রমণকাহিনি, কবিতা—সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই, যেখানে তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য পদচারণ ছিল না।

দেশের বাইরের ঘটনা নিয়েও সোচ্চার ছিলেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। এ সম্পর্কে কাবুল উদ্দিন খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করে। এর প্রতিবাদে ব্যতিক্রম প্রতিবাদ জানান আবুল মকসুদ। এরপর থেকে তিনি সেলাইছাড়া সাদা কাপড় পরিধান করতেন এবং মৃত্যুর আগ-পর্যন্ত তিনি সেই পোশাক পরিধান করেছেন।

শাজাহান বিশ্বাস বলেন, পরিবেশ, নিরাপদ সড়ক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু কিংবা ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের ন্যায্য দাবিতে সোচ্চার ছিলেন তিনি। কখনো কখনো তিনি একাই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। নিরাপদ সড়ক নিয়ে তিনি আন্দোলন করেন। এর ধারাবাহিকতায় সরকার নিরাপদ সড়ক আইন পাস করে।

গত মঙ্গলবার ৭৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন প্রথিতযশা সাংবাদিক, গবেষক ও কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ। মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার এলাচীপুর গ্রামে ছিল সৈয়দ আবুল মকসুদের পৈতৃক ভিটা। পরে যমুনার ভাঙনের শিকার হয়ে হরিরামপুরের কৌড়ি হুগলাকান্দি গ্রামে যান তাঁরা। এই গ্রামেই জাদুঘর ও একটি পাঠাগার গড়ার স্বপ্ন ছিল আবুল মকসুদের। সেখানে ৬০ শতক জমিতে তা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। ইতিমধ্যে জমি ভরাট ও রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। জাদুঘর ও পাঠাগার গড়ার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তিনি। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তাঁর এই অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করার দাবি জানান বক্তারা।